ফারুক খান তুহিন
প্রকাশ: ২০২০-০৪-০৭ ২৩:২১:৩৮ || আপডেট: ২০২০-০৪-০৯ ১৯:১৭:৩৩
সাংবাদিকের ডায়েরি: ০১
করোনা সংকটকালে সরকারের পাশাপাশি রাজনীতিবিদ, বিত্তশালী ব্যক্তি ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কর্মহীন, দরিদ্র ও নিন্ম আয়ের মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন। কিন্তু ত্রাণ বিতরণকালে সমন্বয়হীনতা, স্বজনপ্রীতি, দলপ্রীতি, আত্মপ্রচার ও ঘটা করে বিতরণ মহড়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিশ্লেষকদের মন্তব্য, ত্রাণ বিতরণকারী দায়িত্বশীলরা প্রকৃত চাহিদা সম্পন্নদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে কেউ কেউ একাধিকবার ত্রাণ পাচ্ছেন আবার কেউ কেউ বঞ্চিত হচ্ছেন। অগ্রাধীকার চাহিদা সম্পন্নরা হল বিধবা (মা), অনাথ, নিঃস্ব, পোষ্য, প্রতিবন্ধি, খেটে খাওয়া দিন মজুর, জেলে, নাপিত, মুচি, কুমোর, হকার, ফেরিওয়ালা, রিক্সাচালক, ভ্যানচালক, গাড়ির স্টাফ, টোকাই, মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, মন্দিরের পুরোহিত, বিহারের ভিক্ষু, অসহায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, নিম্ন মধ্যবিত্ত কর্মহীন শ্রমিক, পেশাজীবি, মধ্যবিত্ত চাকরিজীবি, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, এনজিওকর্মী, এবং ত্রাণ বিতরণকারী স্বেচ্ছাসেবকগণ।
প্রান্তিক লোকালয়ের লোকজনের মতে, ত্রাণ বিতরণকারীদের মধ্যে সমন্বয় নেই। যে যার ইচ্ছামত ত্রাণ বিতরণ করছে। কে ত্রাণ পেল আর কে বাদ গেল? তার হিসেব বিতরণকারীরা করছেনা। একইভাবে বিতরণকারীদের ঘনিষ্টজনরাই ত্রাণ পাচ্ছে একাধিকবার।
বিশ্লেষকরা কড়া সমালোচনা করছেন ত্রাণ বিতরণের মহড়া নিয়ে। খোদ এই মহড়াতেই করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। ত্রাণগ্রহীতাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলেও ত্রাণদাতারা মিলে মিশে একাকার। একইভাবে বিতরণকারীর আত্মপ্রচারের লক্ষ্যে তোলা ছবি, সেলফিতে বিব্রত ত্রাণ গ্রহীতাগণ। কেননা, ত্রাণ গ্রহীতাদের সকলে ভিক্ষুক নয়, পরিস্থিতির শিকার!
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ ত্রাণ বিতরণকালে নিজ এলাকার ভোটার-অভোটার ফারাক করছেন। সংকটকালে নিজ এলাকার ভোটার না হলেও ত্রাণ দিতে সমস্যা আছে বৈকি? তাছাড়া অন্য কোন কর্মসূচী, ভিজিডি, ভিজিপি, কাবিখা, কাবিটা, ওএমএস, ১০ টাকায় চাল সুবিধার আওতাভোক্তরা বহুবার সুবিধা পাচ্ছে কিনা তাও দেখার বিষয়।
ত্রাণ মনিটরিং ও বিতরণের পূর্বে এলকাগত প্রতিনিধি নিয়োগের বিষয়েও অনেকে মতামত দিয়েছেন। অনেকে আবার সোচ্চার সেনাবাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের জন্য দাবি তোলেছেন।
তবে ত্রাণ বিতরণে অনেক জনপ্রতিনিধির স্বচ্ছতার প্রশংসাও করেছেন ভোক্তভূগীরা। সরেজমিনে পরিদর্শনকালে বান্দরবানের সুয়ালক ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের ব্যবসায়ী নুরুল্লাহ বলেন, আমাদের চেয়ারম্যানের সুষ্ঠূ বন্টনে প্রকৃত গরিবরা ত্রাণ পাচ্ছেন।
একই এলাকার জয়নাল আবেদীন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় ও মন্ত্রী বীর বাহাদুরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বান্দরবানে ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম নেই।
সংকটকালে ধনী গরিব সবার ঘরে চুলা জ্বলুক এই প্রত্যাশা।
নির্বাহী সম্পাদক – বীর কন্ঠ