চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

এডমিন বীর কন্ঠ

ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল বাবা-মায়ের

প্রকাশ: ২০২০-০৬-২১ ১১:২২:৩৩ || আপডেট: ২০২০-০৬-২১ ১১:২২:৫২

নিউজ ডেস্ক, বীর কন্ঠ :

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বাবা-মায়ের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২১ জুন) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের পেকুয়া অভিরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- অভিরামপুর গ্রামের মো. ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে মো. শাজাহান মিয়া (৩০) ও তার স্ত্রী বেলেনা বেগম (২৫)।

নিহত শাজাহান গৃহস্থালি কাজের পাশাপাশি বাঁশতৈল বাজারে চায়ের দোকান ও গরু মহিষের ব্যবসা করতেন। অনিক (১০) ও জান্নাত (৬) নামে তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় সকাল ৭টার দিকে শাজাহান মিয়া, তার স্ত্রী বেলেনা ও ছেলে অনিক মহিষ বাঁধতে বাড়ির পাশের মাঠে যান। সেখানে পানিতে পড়ে থাকা বিদ্যুতের মেইন লাইনের তারে ছেলে অনিক জড়িয়ে পড়ে। এ সময় বেলেনা তাকে ছিটকে দিতে পারলেও নিজে জড়িয়ে পড়েন। পরে বিষয়টি শাজাহানের নজরে পড়লে তিনিও স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়েন।

এ সময় ছেলে অনিকের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক বেলেনা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন এবং শাজাহানকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির ২০ মিনিট পর তারও মৃত্যু হয়।

অভিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা অমিত রাজসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাদের এলাকায় বাঁশের খুটি ও গাছের ডালের সঙ্গে নিচু করে ওয়াপদার বিদ্যুতের মেইন লাইন টাঙানো হয়েছে। যা খুবই বিপদজনক। মাঝে মধ্যেই বাঁশের খুঁটি ভেঙে বিদ্যুতের তার বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে পড়ে থাকে। ওই তারে জড়িয়ে মানুষ ও গবাদি পশুসহ বন্যপ্রাণী মারা যায়।

মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম ও বাঁশতৈল ইউপি সদস্য অভিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নান বলেন, ওয়াপদা কর্তৃপক্ষের খাম-খেয়ালিপনায় প্রাণহানিসহ প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটছে।

বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এদিকে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে একসঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় অভিরামপুর গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *