admin
প্রকাশ: ২০২৪-০৪-০৭ ০৩:১৩:৪৩ || আপডেট: ২০২৪-০৪-০৭ ০৩:১৩:৪৪
ম ক হামিদ | করোনাকালীন ঘরবন্দী জীবন। কোন ভাবেই সময় কাটছে না। সময়কে কাজে লাগাতে ইউটিউব ও ফেইসবুক দেখেই ব্লক ও হ্যান্ডপেইন্ট নিয়ে কাজ শুরু করেন তানজিনা সোলতানা রিমি। আরামদায়ক পোশাক হওয়ায় ব্লকের কাপড়ের আকর্ষন থেকেই তার শেখা। ভিডিও দেখতে দেখতে আয়ত্ত করে সে। মাত্র ৩ হাজার টাকা দিয়ে অল্প কাপড় আর ক্যামিকেল নিয়ে যাত্রা শুরু করেন রিমি। আর পেছনে থাকাতে হয়নি তাকে। বর্তমানে ৩ লক্ষ টাকা পুঁজি হয়েছে রিমির।
এখন প্রতি মাসে গড়ে অন্তত ৩৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করেন রিমি। বিস্ময়কর ভাবে মাত্র সাড়ে তিন বছর সময়ে একজন সফল উদ্যোক্তায় পরিণত হয়েছেন তিনি। জামা – কাপড়ে হাতের কাজ, এপ্লিক ও ব্লক বাটিকের মাধ্যমে স্বাবলম্বী জীবনের স্বপ্ন ও বাস্তবের যোগসূত্র গড়ে দিচ্ছেন এই উদ্যমী নারী। নিজের নিপুঁণ হাতে শৈল্পিক ছোঁয়ায় অনলাইনে বিক্রি করেন তার পণ্য। ফেইসবুকে নিজ নামে “রিমিস্ ওয়ার্ল্ড” পেইজ খোলেন। এ পেইজেই পারফরমেন্স তুলে ধরেন তিনি। ক্রেতারা এখানেই অর্ডার করেন।
জামা-কাপড়ে এপ্লিক, ব্লক বাটিক ও হাতের কাজের ব্যবসায় নিজে শ্রম দিয়ে পেয়েছেন সচ্ছল জীবনের খোঁজ। তার এই উদ্যোগ পথ দেখছে এলাকার অনেক নারী। দশ জন নারীকে কাজ শিখিয়েছেন। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া সদরে নিজ বাসায় এখন দুইজন মেয়েকে ফ্রীতে কাজ শেখাচ্ছেন।
প্রতিদিন তার বাসায় রঙের বিভায় ফুটিয়ে তোলছে সৌন্দর্য। নিজের নিপুঁণ হাতে তৈরি হচ্ছে লোকজ শিল্পের ঐতিহ্য বাটিক সামগ্রী। দিন দিন সমৃদ্ধ হয়ে উঠছে তার পথচলা। বিভিন্ন নকশায় ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে প্রকৃতি ও আবহমান বাংলার নানা বৈচিত্রময় চিত্র। স্থানীয় চাহিদা পুরণ করেও দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে তার নজরকাড়া সৃষ্টি। শুধু তাই নয়, যে কোন উৎসবে পরিবারের সকল সদস্যদের ম্যাচিং করে কাপড় তৈরি করেন তিনি। তার এ শিল্পকর্মে প্রশংসায় ভাসছেন।
দুই সন্তানের জননী তানজিনা সোলতানা রিমি এক হাতে সামলান সংসার। অন্য হাতে তৈরি করেন বাটিক কাপড় ও পণ্য। বিক্রি করেনও অনলাইনে। স্বামী নাজিম উদ্দিন নিয়াজ সরকারি চাকরি করেন। স্বামীর আন্তরিক সহযোগিতা, উৎসাহ, উদ্দীপনায় তার এ পথচলা।
তানজিনা সোলতানা রিমি বলেন, আমার কাজ গুলো কালেকশন নয়, ক্রিয়েশন। তাই, স্বামীর সহযোগিতা না থাকলে দুই বাচ্চা নিয়ে একা কখনোই এই কাজ কন্টিনিউ করতে পারতাম না। ছেলের স্কুল, কোচিং, ক্রিকেট একাডেমিতে আনা নেওয়া করা থেকে শুরু করে ছেলেকে পড়ানো সবকিছুতে যতোটুকু পারে আমাকে হেল্প করে। সাথে তিন বছরের ছোট বাচ্চাতো আছেই। স্বামীর সহযোগিতা এবং নিজের মনোবল সাথে নিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বৃহৎ আকারে করা সম্ভব। অবহেলিত নারী সমাজকে এগিয়ে নেওয়া যাবে।
সমাজের নারীদের প্রতি রিমি বলেন, নাটক- সিরিয়াল এবং মোবাইলে ফানি ভিডিও তে অতিরিক্ত সময় ব্যায় না করে কিছু সময় সুন্দর কোন কাজে লাগালে বদলে যাবে জীবন।