admin
প্রকাশ: ২০১৭-০৯-১৩ ২০:২০:০৫ || আপডেট: ২০১৭-০৯-১৩ ২০:২০:০৫
বীর কন্ঠ ডেস্ক: শাহপরীদ্বীপের নাফ নদীতে আবারও রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পথে নাফ নদীতে ফের নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে। বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর সাবরাং এর নাজিরপাড়া ও নয়াপাড়া থেকে ৩ জন এবং শাহপরীরদ্বীপ থেকে ৬ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মাইন উদ্দিন খান নিশ্চিত করেছেন। এনিয়ে পর পর ২ রাতের রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ডুবির ঘটনায় মোট ৯ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুর লাশ উদ্ধার করা হলো। এসময় তাদের কাজ থেকে ৯ ভরি ১ আনা ওজনের স্বর্ণালংকার, ২ লক্ষ ২ হাজার মিয়ানমার মুদ্রা (কায়াট) পাওয়া যায়।
শাহপরীদ্বীপের ইউপি সদস্য ফজলুল হক জানান মঙ্গলবার ১২ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পথে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি নৌকা ডুবে যায়। এতে ২৫ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশু ছিল। তম্মধ্যে মাত্র ৭ জন জীবিত তীরে ফিরতে সক্ষম হয়েছে। অপরদিকে মঙ্গলবার ১২ সেপ্টেম্বর ভোররাতে সাবরাং নয়াপাড়ার পুর্বে নাফ নদীতে ৪৫ জন রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা স্থানীয় আবদুর রহমান প্রকাশ ভুলাইয়া কতৃক ডুবিয়ে দেয়ার ঘটনায় ৭ জন জীবিত তীরে ফিরতে সক্ষম হলেও ৩৮ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশু নিখোঁজ ছিল।
পর পর দুই রাতে পৃথক সময় ও স্থানে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ডুবির ঘটনায় মোট ৯ জনের মরদেহ বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর সাবরাং এর নাজিরপাড়া ও নয়াপাড়া থেকে ৩ জন এবং শাহপরীরদ্বীপ থেকে ৮ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দুই নৌকায় জীবিত তীরে ফিরতে সক্ষম হয়েছেন মাত্র ১৪ জন। উভয় নৌকার আরও ৪৫ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশু নিখোঁজ রয়েছে। উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে উভয় নৌকার রোহিঙ্গা রয়েছে। শাহপরীরদ্বীপ থেকে উদ্ধার হওয়া ৮ জনের মধ্যে রয়েছে ৪ জন শিশু, ১ জন মহিলা, ৩ জন কিশোর এবং সাবরাং থেকে উদ্ধার হওয়া ৩ জনের মধ্যে রয়েছে ২ জন মহিলা, ১ জন কিশোর।
শাহপরীদ্বীপে নৌকা ডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া আরেফা বেগম বলেন ‘মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে ২৫ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পথে মঙ্গলবার ১২ সেপ্টেম্বর রাতে শাহপরীরদ্বীপের অদুরে নাফ নদীতে নৌকা ডুবে যায়। এতে তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিখোঁজ রয়েছে’। বেঁচে যাওয়া আরেক নারী ‘ইয়াসমিন আক্তার বলেন ‘নৌকা ডুবিতে তার ২ ছেলের মধ্যে ১ ছেলের মর দেহ পাওয়া গেছে। অন্যজন নিখোঁজ রয়েছে’।
নৌকা ডুবির খবর পেয়ে সাবরাং মগপাড়ায় ছুটে যায় নিখোঁজ দুই রোহিঙ্গা যুবককের মামা মংডু পেরাংপুর এলাকার মোঃ উমর। তিনি বলেন ‘সোমবার রাতে মিয়ানমারের মংডু মংনি পাড়া ঘাটে বাংলাদেশ থেকে একটি নৌকা গিয়ে তাদেরকে আনতে যায়। এতে আমার দুই ভাগিনা মংডু হারিপাড়া এলাকার মকবুল আহমদের ছেলে মোঃ আয়াজ ও মোঃ খালেদ এবং একই এলাকার নজু মিয়ার ছেলে নুর কালাম ডুবে যাওয়া নৌকাতে ছিল। কিন্ত সারাদিন তাদের কোন খবর পাওয়া যায়নি’।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মাইন উদ্দিন খান জানান উদ্ধারকৃত মর দেহ যথাযোগ্য মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া স্বর্ণালংকার ও টাকা থানা হেফাজতে রয়েছে। ##
কপি- হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ