চট্টগ্রাম, , বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

admin

বিচারের মাধ্যমে আইনমন্ত্রীর সাজা হওয়া উচিৎ: রিজভী

প্রকাশ: ২০১৭-১০-১৪ ১৩:২০:১৫ || আপডেট: ২০১৭-১০-১৪ ১৩:২০:১৫

বীর কন্ঠ ডেস্ক: প্রধানবিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার ছুটি নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক যেভাবে মিথ্যাচার করেছেন সেজন্য তার পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ দাবি জানিয়ে বলেন, দেশে আইনের শাসন নিশ্চিত হলে বিচারের মাধ্যমে আইনমন্ত্রীর কমপক্ষে চারবার সাজা হওয়া উচিত। তিনি প্রধান বিচারপতির অসুস্থতা সম্পর্কে বলেছেন এসকে সিনহা ক্যান্সারে আক্রান্ত। কিন্তু প্রধানবিচারপতি গত রাতে অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার প্রাক্কালে বিমানবন্দরে বলেছেন, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। অথচ এসকে সিনহার ব্যাপারে আইনমন্ত্রী মিথ্যা বলেছেন। দেশে বিচার বিভাগের শাসন ফিরে এলে বিচারের মাধ্যমে আইনমন্ত্রীর সাজা নিশ্চিত হবেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

আজ শনিবার এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী বলেন, আইনমন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছেন। অথচ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার সময় বলা হয়েছে রাগ বিরাগের বশবর্তী হয়ে কোনো কাজ করবেন না। কিন্তু তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। একারণে তার সাজা হওয়া উচিৎ।

 

তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী বলেছেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এখন বিচারবিভাগের প্রশাসনে পরিবর্তন ও রদবল করতে পারবেনা। এ ধরনের কথা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর প্রচণ্ড হস্তক্ষেপ। আইনমন্ত্রীর সাজা হতে পারে। কিন্তু এটা দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি করতে পারেন না। আসলে যিনি প্রধান বিচারপতি তিনিই সেটি করতে পারেন।

 

‘স্বাস্থ্যগত কারণে প্রধান বিচারপতি ছুটি নিয়েছেন’ আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রিজভী বলেছেন, আসলে সরকারের যে আক্রোশমূলক কথা বার্তা এবং আক্রমণাত্মক আচরণ এতে প্রধান বিচারপতি বিব্রত হয়েছেন। যা তিনি লিখিত চিঠিতে বলেছেন। তিনি সুস্থ্ আছেন এ কথাও এসকে সিনহা বলেছেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে প্রধান বিচারপতি কোনো ব্যক্তি নন তিনি প্রতিষ্ঠান। তার ওপর আঘাত করা হয়েছে। তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তার মানে বিচারবিভাগের ওপর সন্ত্রাসী কায়দায় আক্রমণ করা হয়েছে এটা আজ প্রমাণিত। এই মুহূর্তে আইনমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি।

 

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে চিকিৎসাধীন। তিনি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শরীর চেকআপ করাচ্ছেন। এখন তার দেশে ফেরার সময় হয়েছে। কিন্তু ঠিক এই মুহূর্তে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় পরোয়ানার হিড়িক পড়েছে। কুমিল্লা এবং ঢাকার বিভিন্ন আদালতে পুরনো মামলায় পরোয়ানা দেয়া হচ্ছে।

 

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা মনে করছেন তিনি নিরাপদ। এ জন্যই বিএনপির ওপর এতো নিপীড়ন ও হয়রানি। কিন্তু তিনি মুর্খের স্বর্গে বাস করছেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী আপনার জানা আছে বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলী, হিরু পারভেজ, চৌধুরি আলম সহ ছাত্রদলের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম করেও বিএনপিকে স্তব্ধ করতে পারেননি। বিএনপি মরেনি। বরং আজো কোটি কোটি কণ্ঠে বিএনপির পক্ষে আওয়াজ হয়, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের পক্ষে আওয়াজ হয়। সুতরাং বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়না জারি করে প্রধানমন্ত্রী আপনার স্বপ্ন সাধ, অঙ্গীকার পূরণ হবে না।

 

রিজভী বলেন, এসকে সিনহাকে গৃহবন্দি রাখা হয়। তাকে মানসিক নিপীড়ন করা হয়েছে। তাকে কথা বলতে দেয়া হয়নি। তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে শঙ্কিত। তাহলে আমার আপনার স্বাধীনতা নিরাপত্তা কিসের? বেগম জিয়া দেশে আসবেন। তার অবদান জাতি ভুলেনি। আমরা স্বৈরাচারী দানবকে রাজপথে মোকাবিলা করবো ইনশাল্লাহ। তিনি অবিলম্বে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও পরোয়না প্রত্যাহারের দাবি জানান।

 

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলামের মুক্তি দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন। সংগঠনের সভাপতির এম জাহাঙ্গীর আলম ছাড়াও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, আমিনুল ইসলাম, এমএ হান্নান প্রমুখ।-নয়াদিগন্ত

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *