চট্টগ্রাম, , বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

admin

৪৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবকাঠামো ও উপযুক্ত শিক্ষক ছাড়াই চলছে মাধ্যমিকের পাঠদান

প্রকাশ: ২০১৭-১১-০১ ২১:২৯:৩১ || আপডেট: ২০১৭-১১-০১ ২১:৩০:৩৯

[starlist][/starlist][starlist][/starlist]

 

বেলাল আহমদ,( বিশেষ)  প্রতিনিধি:

বান্দরবান জেলায় ৪৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় জনবল, অবকাঠামো ও শ্রেণীকক্ষ, শিক্ষা উপকরণ এবং আসবাবপত্র সংকট নিয়েই ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষা কার্যাক্রম চলছে। ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে শিক্ষা কার্যক্রম চলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষকের পদ সৃষ্টি ও শিক্ষকদের মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠদানের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না থাকায় পাঠদানের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্র/ছাত্রীদের অভিভাবকগণ তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার বিদ্যমান দুরাবস্থা নিয়ে পড়েছেন চরম হতাশাই ।

বান্দরবান জেলা শিক্ষা অফিসার সুমা বড়–য়া জানান, কোন ধরণের উপযুক্ততা ও উপযুক্ত শিক্ষক ছাড়াই গণহারে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তিনি আরো জানান, রোয়াংছড়ি মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে এ বছর জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে এমন অনেক শিক্ষার্থী ইংরেজি পাঠ্যবই দেখে দেখে পড়তে পারে না। জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাধ্যমিকের শিক্ষা কার্যক্রম চলা প্রায় বিদ্যালয়ের এমন করুণ অবস্থা।

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ৩৪৩ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষাকে ৮ম শ্রেণীতে উন্নীত করার পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনক্রমে জেলায় গত ২০১৩ শিক্ষাবর্ষে ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হয়। গত ২ বছর ধরে সদর উপজেলার দুংরু পাড়া, রুমা বাজার আর্দশ, রোয়াংছড়ি চাইংগ্যা, লামার মেরাখোলা, তমভ্রু মংচিং পাড়া  বিদ্যালয়-এর ছাত্রছাত্রীরা জে.এস.সি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করছে। এই বছর রোয়াংছড়ি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় এর ছাত্রছাত্রীরা জে.এস.সি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করবে।

চলতি ২০১৭ শিক্ষাবর্ষে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুমোদনক্রমে জেলায় আরো ৩৯ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। জেলায় বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ১১ শত ৪৭, ৭ম শ্রেণীতে ৩৬৮ ও ৮ম শ্রেণীতে ২৭১ জন ছাত্রছাত্রী অধ্যয়ন করছে। মেরাখোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশীষ কুমার দাশ বলেছেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পদ সৃষ্টি না করে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। চেয়ারম্যান পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুুর রহিমও বলেছেন একই কথা।

লামা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার রাশেদুল হাসান মো: মহিউদ্দিন জানান, যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে তাদের সর্ম্পকে কোন তথ্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে নাই। যার কারণে দক্ষতাভিত্তিক, বিষয়ভিত্তিক, একীভূত শিক্ষা, কারিকুলামের উপর, ধারাবাহিক মূল্যায়নের উপর সহ প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ছাড়াই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের সাথে ছলনার শামিল।

শিক্ষানুরাগী মোঃ আলমগীর জানান, পার্বত্য জেলায় শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে করা হয়। এক্ষেত্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার কারণে ছাত্র/ছাত্রীরা উপযুক্ত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বি.এড এবং বিষয় ভিত্তিক যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মাধ্যমিকের পাঠদান করে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রিটন কুমার বড়–য়া জানান, পদ সৃষ্টির জন্য আমরা সরকারকে লিখেছি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *