Alauddin Lohagara
প্রকাশ: ২০১৮-০১-০৬ ২০:৩৯:৫৫ || আপডেট: ২০১৮-০১-০৬ ২০:৩৯:৫৫
বীর কন্ঠ ডেস্ক:
মহেশখালী উপজেলা কক্সবাজার জেলার একটি দ্বীপ। কক্সবাজার থেকে এটি মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। জনশ্রুতি আছে ১৫৫৯ সালের প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ফলে মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এই দ্বীপের সৃষ্টি হয়। বৌদ্ধ সেন মহেশ্বর থেকেই প্রায় ২০০ বছর আগে এই জায়গায়র নামকরণ হয়। যা মহেশখালী দ্বীপ নামেও পরিচিত। মহেশখালী উপজেলায় সোনাদিয়া, মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা নামে তিনটি ছোট ছোট দ্বীপ রয়েছে। পান, মাছ, শুঁটকী, চিংড়ি, লবণ এবং মুক্তার উৎপাদনে সমগ্র বাংলাদেশে এই উপজেলার সুনাম রয়েছে। কক্সবাজার থেকে ৪-৫ ঘন্টা সময় ব্যায় করলেই মহেশখালী দ্বীপ থেকে ঘুরে আসতে পারবেন।
কি দেখবেন:
মহেশখালি বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়িয়া দ্বীপ। এ দ্বীপের মৈনাক পর্বতের উপরে রয়েছে আদিনাথ মন্দির। এ দ্বীপের কারুকার্য এখানে আসা দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে এছাড়াও বছরের ফাল্গুন মাসে এখানে আদিনাথ মেলা অনুষ্টিত হয়। এখানে রয়েছে বেশ কিছু বোদ্ধ বিহার, জলাবন ও নানা প্রজাতির পশুপাখি। মহেশখালীতে আছে আদিনাথ মন্দির, রাখাইন পাড়া ও স্বর্ণ মন্দির। চাইলে ঝাউবাগান ও চরপাড়া বীচ থেকে ঘুরে আসতে পারেন। চলতি পথেই দেখতে পাবেন পান গাছের বাগান আর লবণের মাঠ। মহেশখালীর পানের সুনাম সারা বাংলাদেশ ব্যাপী তাই এখানে এলে অবশ্যই মনে করে পান খাবেন।
কিভাবে যাবেন:
মহেশখালীতে যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে কক্সবাজার সড়ক, রেল এবং আকাশপথে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী বাসগুলোর মধ্যে গ্রিন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, এস.আলম পরিবহন, দেশ ট্রাভেলস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। শ্রেণী ভেদে বাসগুলোর প্রতি সীটের ভাড়া ৯০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার পর্যন্ত।
ঢাকা থেকে ট্রেনে কক্সবাজার ভ্রমণ করতে চাইলে কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলস্টেশান হতে সোনার বাংলা, সুবর্ন এক্সপ্রেস, তূর্ণা-নিশীথা, মহানগর প্রভাতী/গোধূলী, চট্রগ্রাম মেইলে করে চট্রগ্রাম রেল স্টেশন এ নেমে সেখান থেকে বাসে করে কক্সবাজার । এছাড়া বাংলাদেশ বিমান, নভো এয়ার,ইউনাইটেড এয়ার ওয়েজসহ বেশকিছু বিমান ঢাকা থেকে কক্সবাজার ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে।
কক্সজবাজার শহরের যেকোন জায়গা থেকে মহেশখালী যাবার জেটিতে (৬ নং ঘাট) চলে আসুন। তারপর লোকাল ট্রলার বা স্পীড বোটে ৭০-৮০ টাকা ভাড়ায় মহেশখালি আসবেন। চাইলে স্পিডবোট রিজার্ভ নিতে পারবেন। মহেশখালি এসে সবকিছু ঘুরে দেখতে এক বা দুজন হলে একটা রিক্সা (ভাড়া ১৫০-১৭০ টাকা) অথবা ৫-৭ জন হলে অটো/ইজিবাইক ভাড়া (৩০০-৩৫০ টাকা) করে নিবেন। তবে ভালো করে দরদাম করে নিবেন, না হয় ভোগান্তিতে পরতে পারেন।
কোথায় থাকবেন:
অল্প দূরত্ব হওয়ায় মহেশখালী থেকে সহজেই ফিরে আসা যায়। এছাড়া মহেশখালীতে থাকার তেমন ব্যবস্থা নেই তাই রাত্রি যাপনের জন্য ফিরে আসুন কক্সবাজার। অফ সিজনে বুকিং না দিয়ে গেলেও হোটেলে রুম পাবার নিশ্চয়তা থাকে কিন্তু ডিসেম্বরের ১৫ থেকে জানুয়ারী ১৫ তারিখ পর্যন্ত অগ্রিম বুকিং দিয়ে যাওয়াই শ্রেয়। এসময় অগ্রীম বুকিং ছাড়া কক্সবাজার ভ্রমণ করা বোকামি।
কি খাবেন:
অল্প দূরত্ব হওয়ায় মহেশখালী থেকে সহজেই ফিরে আসা যায়। আর তাই সাময়িক ক্ষুদা নিবারণের জন্য দ্বীপেই হালকা খাবার খেয়ে নিতে পারেন। কিংবা ফিরে এসে খেতে পারেন কক্সবাজারে। কক্সবাজারে সব ধরণ ও মানের রেস্টুরেন্ট আছে। মধ্যম মানের বাজেট রেস্টুরেন্টের মধ্যে রোদেলা, ঝাউবন, ধানসিঁড়ি, পৌষি, নিরিবিলি ইত্যাদি উল্লেখ করার মত। সিজন অনুসারে অন্য অনেক কিছুর মত এখানে খাবারের দামও কম/বেশী হতে পারে।