admin
প্রকাশ: ২০১৮-০৪-২৯ ১০:৪৫:৩৭ || আপডেট: ২০১৮-০৪-২৯ ১০:৪৫:৩৭
বীর কন্ঠ ডেস্ক :
দুই বাসের বেপরোয়া রেষারেষিতে হাত হারিয়ে মারা যাওয়া সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হোসেনের মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই চলে গেলেন রোজিনা আক্তার (২১)। রোববার সকাল সাড়ে সাতটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থানার ঘোষগাঁও গ্রামে। বাবার নাম রসূল মিয়া। তিনি একজন কৃষক। তার ছয় মেয়ে ও এক ছেলে।
এছাড়া রোজিনা আক্তার বেসরকারি গাজী টেলিভিশন (জিটিভি) ও অনলাইন পোর্টাল সারাবাংলা ডটনেটের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার গৃহকর্মী ছিলেন। দুর্ঘটনার পর রোজিনার মা মাজেদা খাতুন জানিয়েছিলেন, বড় বোন ও রোজিনা মিলে পরিবারের খরচ বহন চালাতেন। এখন মেয়েটির মত তার পরিবারও অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল।
গত ২০ এপ্রিল রাত আটটার দিকে বনানীর সৈনিক ক্লাব থেকে মহাখালীর মাঝামাঝি স্থানে বিআরটিসির বাসচাপায় রোজিনার ডান পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সে সময় স্বজনেরা জানান, সন্ধ্যায় বান্ধবীর বাসা থেকে নিকেতনে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার বাসার উদ্দেশে ফিরছিলেন। সৈনিক ক্লাব থেকে কোনো বাস না পেয়ে সে হেঁটে মহাখালীর দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিনিসহ কয়েকজন রাস্তা পার হচ্ছিলেন। দূর থেকে বিআরটিসির একটি দোতলা বাসকে ইশারা দিলে সেটির গতি ধীর হয়ে আসে। কিন্তু, হঠাৎই চালক তার সামনে এসে বাসের গতি বাড়িয়ে দেন। এ সময় তার পায়ের ওপর একটি চাকা উঠে যায়।
এরপর উদ্ধার করে তাকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু) ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে গত ২৫ এপ্রিল ঢামেকে স্থানান্তর করা হয়।পুলিশ এ ঘটনায় ওই রাতেই বাসচালক শফিকুল ইসলাম সুমনকে আটক করে। তবে তার সহকারী (হেলপার) এখনো পলাতক।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল রাজধানীর বাংলামটরে দুই বাসের চাপায় হাত হারানো তিতুমীরকলেজের ছাত্র রাজীব হোসেন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢামেকে মারা যান।
গত ৩ এপ্রিল বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন। বাসটি হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিপরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ করে পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস ওভারটেক করে।
সে সময় বিআরটিসির দোতলা বাসটির পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে থাকা রাজীবের ডান হাতটি বাইরের দিকে সামান্য বেরিয়েছিল। স্বজন পরিবহনের বাসটি বিআরটিসি বাসের গা ঘেঁষে পেরিয়ে যাওয়ার সময় রাজীবের হাতটি কাটা পড়ে।ঢাকায় রাজীব হোসেন যাত্রাবাড়ীর মীর হাজিরবাগের একটি মেসে থাকতেন। টিউশনি করতেন এবং চাচা, খালাসহ সবার সহযোগিতায় পড়াশোনা চালিয়ে নিচ্ছিলেন।
রাজীবের মা-বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে রাজীব সবার বড়। বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফলের দাসপাড়ায়।