চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

admin

মাদক নির্মূলে কোন সরকারই আন্তরিক নয়

প্রকাশ: ২০১৮-০৬-০৮ ১৫:৪৬:১৩ || আপডেট: ২০১৮-০৬-০৮ ১৫:৪৬:১৩

ডাঃ মুহাম্মদ ওমর ফারুক:

যতই লাভ জনক হোক না কেন  এমন কোন পেশা বা কাজ করা উচিত নয়,যে পেশা বা কাজের কারনে আপনাকে সারা জীবন অপবাদ বা চোরের মত পালিয়ে থাকতে হয় বা যেত হয় ঘন ঘন জেলখানাতে। জীবন যাপনে টাকা একটি খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। তবে এটি কি এতই প্রয়োজনীয় উপাদান- যা অর্জনের  জন্য একটি ব্যক্তি বা পরিবারের হাতে মাদকের মত ভয়ংকর মরণ নেশা দ্রব্য তুলে দিয়ে তা ইনকাম করতে হবে”? না,এটি কোন দিনই কাম্য হতে পারেনা।আসুন আমরা-মাদক,মাদকের আশ্রয় প্রশ্রয় দাতা সবাইকে না বলি।

দেশে মাদক নির্মূল হোক তা কোন সরকারই চাই নিঃ

যদি বলি-“ মাদক নির্মূলে দেশের কোন সরকারের সৎ ইচ্ছা ছিল না তাহলে কি কথাটি ভুল হবে? আমি বলব মোটেও ভুল হবেনা।আমার কথার পক্ষে আমার যুক্তি উপস্থাপন করছি।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় মাদক সমস্যাটি নতুন কোন সমস্যা নয়,খৃষ্ট-পূর্ব থেকে এই সমস্যাটি মানব জাতির উপর ভর করে আছে।এমন কি এই মাদককে কেন্দ্র করে পৃথিবীতে অনেক যুদ্ধও সংঘটিত হওয়ার ইতিহাস  আছে। আবার এই মাদকের কারনে অনেক রাষ্ট্র,জাতি,সমাজও ধ্বংস হওয়ার অনেক নজির আছে। এবার আমার দেশের দিকে নজর দিয়-নামের ভিন্নতা থাকলেও মুলত আমাদের দেশে মাদক নিয়ন্ত্রণে একটি প্রতিষ্টা গঠিত হয় স্বাধীনতা  পরবর্তী থেকে।মাঝে মাঝে উক্ত প্রতিষ্টানের কিছু কাগজী পরিবর্তন হয়েছে মাত্র।যার বর্তমান নাম-মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর,বর্তমানে যা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় অধিনস্থ।

একটি প্রতিবেদনে দেখলাম উক্ত প্রতিষ্টানকে ঢাল তলোয়ার বিহীন নিধিরাম সরকার হিসাবে আখ্যা করেছেন।অপরাধ জগতের ভয়ংকর মাদক চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে কাজ করেন উক্ত প্রতিষ্টানের কর্মকর্তারা কিন্তু কোন অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেনা।অভিযান পরিচালনার জন্য নেই তাদের নিজস্ব কোন গাড়ি,নেই কোন পর্যাপ্ত প্রযুক্তি,এমনি নেই কোন মাদক সনাক্ত যন্ত্রও। সব চেয়ে বড় কথা- নেই পর্যাপ্ত জনবল।নিজস্ব বাহিনী না থাকাতে কোন অভিযান পরিচালনার জন্য পুলিশকে খবর দিতে হয় ওদের। তথ্য মতে সারা দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মী ১৭০০, প্রতি জেলায় কাজ করে ৭জন করে।এখানে অনেকে হয়তো বলবেন-পুলিশ ও র্যা ব আছে না মাদক ধরার জন্য? সেক্ষেত্রে আমার উত্তর এটি উক্ত বাহিনী গুলোর অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়মিত দায়িত্ব নয়,নিয়মিত দায়িত্ব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের। উপরোক্ত লেখা গুলোর উপসংহারে কি প্রমান করে না,স্বাধীনতা পরিবর্তী কোন সরকারই মাদক নিয়ন্ত্রণে আন্তরিক ছিল না। এবার আমরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে যুগোপযোগী করার মাধ্যমে মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকারের সৎ ইচ্ছার প্রমান দেখতে চাই।

আইনী জটিলতাঃ  বর্তমান  মাদক আইনে কারো কাছে হাতে নাতে মাদক পাওয়া না গেলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না।যার কারনে টুটকা মাদক বিক্রিতা বা পাচারকারী গুলোকে আইনের আওতায় আনা গেলেও  পর্দার আড়ালের মাদকের গডফাদার গুলোকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। তাই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনটি যুগোপযোগী করা এখন সময়ের দাবী।

বর্তমান অভিযানঃ  বিনা বিচারে কোন শাস্তি প্রয়োগ যেমন কারো কাম্য নয়।আবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রকে অনেক সময় কঠোর হতে হয় তাও অবিশ্বাস্য নয়।তবে এটা সত্য যে বর্তমান অভিযানটি মাদক নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী নয়, অস্থায়ী সমাধান।স্থায়ী সমাধানে আইনের আরো কিছু পরিবর্তণ জরুরী হতে পারে বলে আমি মনে করি।

অপরাধ বিজ্ঞানে একটি কথা আছে-অপরাধের মুল ধাপে পৌছাতে গিয়ে সামনে আসা ছোটখাট ধাপ গুলো ধ্বংস করে করে সামনের দিকে পার হতে হয়,ছোটখাট ধাপ গুলো অক্ষত রেখে নয়।সে বিবেচনায় আমি বর্তমান চলমান মাদক বিরোধী অভিযানকে স্বাগত জানাচ্ছি।

লেখকঃ ডাঃ মুহাম্মদ ওমর ফারুক(হোমিওপ্যাথ)

প্রকাশিতঃ ম্যাগাজিন প্রিয় লোহাগাড়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *