চট্টগ্রাম, , সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

ঈদ উল আজহায় দুর্ঘটনায় ২৫৯ জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ২০১৮-০৮-৩১ ১৪:১৫:৫৩ || আপডেট: ২০১৮-০৮-৩১ ১৪:১৫:৫৩

 

ঢাকা: গেল কোরবানি ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২৫৯ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৯শ ৬০ জন।

শুক্রবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি।

সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, গত ১৬ আগস্ট থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত মোট ১৩ দিনে ২৩৭টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ দুর্ঘটনায় ২৫৯ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৯৬০জন।

গত তিন বছরের ঈদ উল আজহার সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র তুলে ধরে সংগঠনটির মহাসচিব জানান, ২০১৬ সালে নিহত হয় ২৪৮ জন, ২০১৭ সালে ২৭৪ জন আর এ বছর নিহত হয়েছেন ২৫৯ জন। এর মধ্যে বাস দূর্ঘটনায় ২৯.১৮ শতাংশ, ট্রাক ও কার্ভাড ভ্যানে ২৩. ৬ শতাংশ, নছিমন-করিমনে ৬.৬ শতাংশ, রিকসা ও ইজিবাইকে ৫. ৯ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

এসব দুর্ঘটনার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পন্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহন, বিরতিহীন/বিশ্রামহীন ভাবে যানবাহন চালানো, অপ্রাপ্ত ও অদক্ষ চালক হেলপার দ্বারা যানবাহন চালানো, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মহাসড়কে অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত রিকসা, নছিমন, করিমন ও মোটর সাইকেল অবাধে চলাচল, বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো, সড়ক-মহাসড়কে ফুটপাত না থাকা এবং সড়ক-মহাসড়কে বেহাল দশা এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

এসব দুর্ঘটনা রোধে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় রোড সেইফটি ইউনিট গঠন করে নিয়মিত সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে যথাযথ প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রশিক্ষিত চালক গড়ে তুলতে চালক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা, নিয়মিত রাস্তা অডিট করা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা, ওভারলোড নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহনের ব্যবস্থা করা, পৃথক লেনের ব্যবস্থা করা, সড়ক মেরামত করা, মহাসড়কে নছিমন করিমন চলাচল বন্ধ করা, রাস্তা পারাপারে ফুটপাত, আন্ডারপাস ও ওভারপাস তৈরি করার সুপারিশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে তত্ত্ববধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে এ কথাটি ভুল। এমন না যে তারা আমাদের অজানা কিছু জানিয়ে দিয়েছে। যেসব কারনে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে সেটি সকলেরই জানা আছে। সেটিই সবার সামনে তারা তুলে ধরেছে। তারা অত্যন্ত গর্হিত একটি বাস্তবতাকে আমাদের সামনে উন্মোচিত করেছে।

তিনি বলেন, এখানে মুল সমস্যা হলো আমাদের জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে। নানামুখি পদক্ষেপ নেওয়া হলেও জবাবদিহিতা না থাকলে সেটি ফলপ্রসু হবে না।

জবাবদিহিতার পথে অন্যতম অন্তরায় হলো যিনি নীতি নির্ধারণ করছেন তিনি একাধারে মালিক এবং শ্রমিক পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করছেন। মন্ত্রী পরিষদে তিনি বা তারা রয়েছেন। সুতরাং ওইখানে জবাবদিহিতার বিষয়টি যখন আসবে তখন সেখানে তারা তাদের পক্ষে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে বলেও তিনি জানান।

সড়ক দুর্ঘটনা সব দেশেই হয় কিন্তু আমাদের দেশের মত অযাচিত সড়ক দুর্ঘটনা পৃথিবীর কোথাও নেই। অদক্ষ চালক, রেষারেষি এবং চালক স্বেচ্ছাচারিতায় যে দুর্ঘটনা ঘটছে সেটি মেনে নেওয়া যায় না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়াসহ অনেকেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *