চট্টগ্রাম, , সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

আলাউদ্দিন ডেস্ক কন্ট্রিবিউটর

সাতকানিয়া-লোহাগাড়া কওমী ওলামা পরিষদের বিশাল সমাবেশে ড. আবু রেজা নদভী এমপি

প্রকাশ: ২০১৮-০৯-০৭ ০০:৩৮:২০ || আপডেট: ২০১৮-০৯-০৭ ০০:৩৮:২০

চট্টগ্রাম-১৫ সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাংসদ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামিক স্কলার প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বলেন, উপমহাদেশে ইসলামি আক্বিদা, চিন্তা চেতনা এবং তাহযীব-তামাদ্দুনের সংরক্ষণ ও প্রচার প্রসারে কওমী মাদ্রাসা সমূহের ভূমিকা অপরিসীম। ভারতের উত্তর প্রদেশে উনিশ শতকের শুরুতে প্রতিষ্ঠিত দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসার মাধ্যমে বাংলাদেশে কওমী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন হয়। বাংলাদেশে প্রচলিত দুই ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে আলিয়া ধারার মাদ্রাসা সমূহের শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি চাকরীতে প্রবেশাধিকারসহ সকল সুযোগ সুবিধা অবারিত থাকলেও কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীগণ সকল সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। ২০১৭ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক কওমী মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তরকে সরকারি স্বীকৃতির ঘোষণা দেওয়ার মাধ্যমে কওমী মাদ্রাসা সমূহের দাওরায়ে হাদীস (তাকমীল) এর সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান-২০১৮ খসড়া নীতি অনুমোদন দেয় মন্ত্রীসভা। সরকারের এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের ফলে দীর্ঘদিন সরকারি চাকরীসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত দেশের কওমী শিক্ষার্থীগণ যোগ্যতা ও মেধা অনুযায়ী সকল সরকারি চাকরীতে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি হল।

তিনি আজ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ইং বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় সাতকানিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র কেরানীহাট হক টাওয়ার চত্বরে সরকার কর্তৃক কওমী শিক্ষার সর্বস্তর তাকমিল (দাওরাহ) সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান করায় সাতকানিয়া-লোহাগাড়া কওমী ওলামা পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত বিশাল শুকরিয়া সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

শুকরিয়া সমাবেশে প্রফেসর ড. আবু রেজা নদভী এমপি আরও বলেন, সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কোন শিক্ষা ইসলামে পাওয়া যায় না। ইসলাম মানুষকে শান্তিপ্রিয়, বিনয়ী ও মহৎ গুণাবলীর অধিকারী হতে উদ্বুদ্ধ করে। আল্লাহ পাকের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলো মানুষ। এই শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিকেও নির্মম ভাবে হত্যা করতে বিপদগামীরা আজ দ্বিধা করছেনা। ধর্মের নামেই করা হচ্ছে যতসব অধর্ম। তিনি বলেন, ইসলাম ধর্মে জঙ্গীবাদ ও আত্মহননের কোন সুযোগ নেই। ইসলাম ও জঙ্গীবাদ সম্পূর্ণরূপে স্ববিরোধী। ইসলামের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের কোন সম্পর্ক থাকতে পারেনা। যারা করছে তারা ইসলাম কি তাও জানেনা। বিপদগামী যেসব মুসলিম তরুন যুব সমাজ ব্রেইনওয়াশের শিকার হয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে জঙ্গীবাদের মাধ্যমে আত্মঘাতী হামলা, নিরীহ মানুষ হত্যা করে বেহেশতে যাওয়ার আশা করছে তা কোনদিনই সম্ভব নয়। আত্মঘাতি হামলা ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম। ইসলামে যুদ্ধে পর্যন্ত সিভিলিয়ান হত্যা নিষেধ রয়েছে। স্পষ্ট নিষেধ রয়েছে- সম্পত্তি নষ্ট করা যাবেনা, গাছ কাটা যাবেনা। তিনি বলেন, যে কেউ ইচ্ছা করলে জিহাদ ঘোষণা করতে পারেনা। শান্তিপূর্ণ পথ থাকলে কোনো অশান্তির পথে যেতে ইসলাম অনুমোদন করেনি। তিনি বলেন, ইসলামের নামে যেহেতু সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদিতা চলছে সুতরাং কোরআন সুন্নাহর দৃষ্টিকোণ থেকে এসবের কূফল সম্পর্কে মাদ্রাসার শিক্ষক, মসজিদের খতীব ও ওলামা মাশায়েখদের ভূমিকা পালনে বিশেষ দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। শান্তির ধর্ম ইসলামকে কোনভাবেই কলঙ্কিত করার সুযোগ দেওয়া যাবে না। তিনি ধর্মের নামে উচ্ছৃঙ্খল ও উগ্র জীবন পরিহার করে সবাইকে দেশের শান্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

সাতকানিয়া-লোহাগাড়া কওমী ওলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজির সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রদান বক্তা ছিলেন পটিয়া জমিরিয়িা মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা আব্দুল হালিম বোখারী। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী। অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা হাবিবুল্লাহ, মাওলানা জালাল উদ্দিন, মাওলানা আবুল হাছান, মাওলানা ওবাইদুল্লাহ হামযা, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মাওলানা ছৈয়দুল আলম আরমানী, মাওলানা আব্দুল গফুর, মাওলানা রুহুল আমীন, মাওলানা শিব্বির আহমদ , মাওলানা শামসুদ্দীন, মাওলানা ফোরকান আহমদ, মাওলানা হাবিবুল ওয়াহেদ, মাওরানা ফরিদ আহমদ , মাওলানা তাওহিদুল ইসলাম, মাওলানা ফায়সাল আহমদ, মাওলানা আজিজুল হক, মাওলানা আব্দুল মালেক, মাওলানা আমিনুল্লাহ, মাওলানা মুফতি হারুন, মাওলানা নুরুচ্ছফা, মাওলানা কুতুব উদ্দীন, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, মাওলানা মো: জোবায়ের, মাওলানা মো: নোমান, মাওলানা হোজাইফা প্রমুখ।

বার্তা প্রেরক

(অধ্যাপক শাব্বির আহমদ)

প্রেস সচিব, মাননীয় সাংসদ

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *