চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

মো: এরশাদ আলম লোহাগাড়া প্রতিনিধি

লোহাগাড়ার এক কিশোরীকে বান্দরবানে নিয়ে প্রেমিকসহ ৪ জনে মিলে ধর্ষণ

প্রকাশ: ২০১৮-১০-০৪ ০০:৪০:৪৮ || আপডেট: ২০১৮-১০-০৪ ০০:৪০:৪৮

লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ মল্লিক ছোবহান এলাকার এক কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বান্দরবানের প্রান্তিক লেক এলাকার নির্জন পাহাড়ে নিয়ে প্রেমিক ও তার ৩ বন্ধু মিলে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ব্যাপারে বান্দরবান সদর থানায় মামলা করা হয়েছে। ধর্ষণকারীরা হলো বান্দরবান সদর উপজেলার সোয়ালক ইউনিয়নের ভাগ্যরকুল এলাকার দামীর হোসেনের পুত্র বেলাল উদ্দিন (২৯) সে (ভিকটিম) কিশোরীর প্রেমিক বলে জানা গেছে।

অন্যরা হল একই এলাকার নুর মোহাম্মদের পুত্র, অাবুল বশর (৩০) আব্দুর রশিদের পুত্র, মোঃ জয়নাল (৩০)মনু মিয়ার পুত্র, মোঃ নাছির (২৯)।স্থানীয় সুত্রে জানাযায় বেলাল এবং (ভিকটিম) কিশোরী সম্পর্কে অাত্নীয় হয়।

গত এক বছর যাবত তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সরেজমিনে গেলে জানা যায়,

গত ২৮সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) বিকেলে প্রেমিক বেলাল উদ্দিন (ভিকটিম) কিশোরীকে পালিয়ে বিয়ে করার প্রস্তাব রাখলে সে সহজ সরল মনে রাজি হয়ে যায়। সে সুযোগে তাকে বান্দরবান কোর্টে বিয়ে করার কথা বলে সিএনজি গাড়ী করে বান্দরবানের প্রান্তিক লেক নামক স্থানে নিয়ে যায়। সেখানের নির্জন পাহাড়ে  নিয়ে আরো তিনজন বন্ধু সহ মোট চারজন মিলে মেয়েটিকে প্রাণে মারার হুমকি প্রদর্শন করে জোরপূর্বক সবাই মিলে গনধর্ষণ করার পর মেয়েটিকে রাত ১১টার পর সিএনজি করে সাতকানিয়ার কেরাণীহাটে রেখে ধর্ষকরা কৌশলে পালিয়ে যায়।

(ভিকটিম) মেয়েটি বলেন, কোর্টে বিয়ে করবে বলে আমাকে আইডি কার্ড সহ নিয়ে যেতে বলেন, আমি বাড়ী থেকে গোপনে বের হয়ে পদুয়ায় অাসলে বেলাল আমাকে একটা সিএনজি গাড়ীতে তোলে কেরানিহাটের দিকে নিয়ে যায়। কেরাণীহাট থেকে সিএনজিতে আরো ৩জন লোক উঠেন। তারা আমাকে বান্দরবানের দিকে নিয়ে যায়। আমার সন্দেহ হলে আমি যেতে না চাইলে বেলাল আমাকে বান্দরবান কোর্টে বিয়ে করার জন্যে সবই প্রস্তুত রয়েছে বলে জানাই।

কোর্টে না নিয়ে অামাকে একটা পাহাড়ের নির্জন এলাকায় নিয়ে সবাই মিলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করেন। আমাকে বিভিন্ন হুমকি প্রদর্শন করে মুখে কাপড় বেধে চেপে ধরে বিভিন্ন ভাবে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে।আমাকে একের পর এক সবাই মিলে নষ্ট করে। অামি শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। রাত ১১টার পর অামাকে কেরানিহাটে রেখে সবাই পালিয়ে যায়। এবং আমার মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নেয়। সেখান থেকে এক দোকানদারের কাছে বিপদে পড়েছি বলে ২০টাকা খুজে নিয়ে গাড়ীতে করে পদুয়ায় আমার এক অাত্নীয়র বাড়ীতে এসে বাড়ী থেকে ঝগড়া করে চলে আসছি বলে অাশ্রয় নিই।

পরেরদিন (শনিবার) সকালে মেয়েটি তার ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোনে কল করলে অপরপ্রান্ত থেকে মোবাইলটি এক মহিলা রিসিভ করেন। (মহিলাটি ধর্ষণকারী একজনের স্ত্রী)ঐ মহিলাকে ফোনে ঘটনাটি সব খুলে বললো (ভিকটিম) কিশোরী।

তখন ধর্ষণকারীর স্ত্রী (ভিকটিম)  মহিলাটিকে সব ধর্ষণকারীর নাম ও ঠিকানা দিয়ে এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যানদের অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। ধর্ষণকারীর স্ত্রী’র দেয়া পরামর্শ ও ঠিকানা নিয়ে (ভিকটিম) মেয়েটি তাদের এলাকায় গিয়ে সেখানকার এক অাত্নীয়র বাড়ীতে অবস্থান নিয়ে স্থানীয় মেম্বারকে সব খুলে বলেন। পরে সোয়ালক ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের দু’জন মেম্বার ও বর্তমান মহিলা মেম্বারের সহযোগীতায় এলাকাবাসী ধর্ষণকারীদের ধরে নিয়ে অাসে।সেখানে এলাকাবাসীর সামনে ধর্ষণকারীরা ঘটনাটি স্বীকার করেন।

পরে মেম্বার সহ এলাকাবাসীরা (ভিকটিম) মেয়েটির বাবা-মা’কে খবর দিয়ে নিয়ে অাসে। এবং (সোমবার) সোয়ালক ভাগ্যরকুল এলাকায় স্থানীয় ভাবে একটা শালিসি বৈঠক বসানো হয়। এই বৈঠকে ১নং অাসামী বেলালকে বাদদিয়ে বাকী

৩জনকে অভিযুক্ত করে ৩০হাজার টাকা করে ৯০হাজার টাকার জরিমানা করে সমাধান করার চেষ্টা করা হয়।

কিন্তু ১অাসামী পাষান্ড প্রেমিক বেলালকে বাদদিয়ে বাকী ৩ জনের উপর দোষ তোলে দেওয়ায় ধর্ষণকারী ৩জনই বিচার মেনে নেয়নি।  বিচারে কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায়, স্থানীয় মহিলা মেম্বার সহ এলাকাবাসীরা মেয়েটির অভিভাবকদের অাইনের অাশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন।

(মঙ্গলবার) ভিকটিমের অভিভাবকরা লোহাগাড়া থানায় মামলা করতে গেলে, ঘটনাটি বান্দরবানের এবং অাসামীরাও বান্দরবানের তাই লোহাগাড়া থানা পুলিশ তাদের বান্দরবানে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।পরে বান্দরবান সদর থানায় একটি মামলা করেছে (ভিকটিম) অসহায় মহিলার পরিবার।

সালিশি বৈঠকে ১নং অাসামী বেলালকে বাদদিয়ে বাকী ৩জনের উপর কেন দোষ চাপিয়ে দিয়েছে জানতে চাইলে কয়েকজন স্থানীয়রা জানাই বেলাল বর্তমান ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিনের ভাতিজা বলে তাকে বাদ দেয়া হয়েছে।

এই ব্যাপারে মেম্বার জামাল উদ্দিনের সাথে কথা বলতে চাইলে ক্যামরার সামনে তিনি কথা বলতে রাজি হয়নি।নিউজটি লিখা পর্যন্ত এখনও কোন অাসামী গ্রেফতার হয়নি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *