জাহেদুল হক আনোয়ারা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০১৯-০৭-০৭ ২৩:২১:২৩ || আপডেট: ২০১৯-০৭-০৭ ২৩:২১:২৩
আনোয়ারা প্রতিনিধি :
আনোয়ারায় নারী শ্রমিককে দলবদ্ধ ধর্ষণের মূলহোতা আবদুন নুর (২৫) ‘গোলাগুলিতে’ নিহত হয়েছেন। গতকাল রবিবার সকালে উপজেলার চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের হাজীগাঁও পাহাড় থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আবদুন নুর উপজেলার পশ্চিম বৈরাগ গ্রামের মৃত আবদুচ ছাত্তারের ছেলে। পুলিশের দাবি, তার বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ, ছিনতাইসহ চারটি মামলা রয়েছে।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,রবিবার ভোর রাতে হাজীগাঁও পাহাড়ে গোলাগুলির শব্দশুনে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ একজনের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বৈরাগ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের গ্রামপুলিশ মোহাম্মদ হানিফ লাশটি আবদুন নুরের বলে শনাক্ত করেন। লাশ ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের ধারণা, অন্তর্দ্বন্দের কারণে ভাগবাটোয়ারা নিয়ে প্রতিপক্ষের গুলিতে আবদুন নুর নিহত হয়। এ সময়ঘ টনাস্থল থেকে একটি দেশিয় এলজি, চারটি কার্তুজ ও তিনটি ছোরা জব্দ করেছে বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মূলহোতা আবদুন নুর গোলাগুলিতে নিহতের খবর পেয়ে মামলার বাদি রিপন চন্দ্র রায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, দেশে এখনো আইনের উর্ধ্বে কেউ নেই,তার প্রমাণ পেয়েছি। আমার বিশ্বাস ন্যায়বিচার পাব। নিহত আবদুন নুরের স্ত্রী নাছিমা আক্তার স্থানীয় একটি জুতা কারখানায় শ্রমিকের কাজ করে শ্বাশুরীসহ ৩ শিশুকন্যা নিয়ে ঘর সংসার চালান। তার ভাষ্যমতে, বিগত এক বছর ধরে তার স্বামী নানা অপরাধে জড়িয়ে সংসারের খোঁজ-খবর নেয়নি।
আনোয়ারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুব মিল্কী বলেন, গত বুধবার রাতে উপজেলার চায়না রোড এলাকায় এক নারী শ্রমিককে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় যে মামলা হয়েছিল, তার মূল আসামী ছিলেন আবদুন নুর। ১৯ বছর বয়সী ওই নারী শ্রমিক সেদিন কারখানার কাজ শেষে রাতে বাড়ি ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি উপজেলার কোরিয়ান ইপিজেডের একটি জুতা কারখানায় কাজ করতেন। তারবাড়ি চন্দনাইশ উপজেলার পশ্চিম সূচিয়া গ্রামে।
ওই ঘটনায় মেয়ের বড় ভাই বাদি হয়ে অজ্ঞাত চারজনকে আসামী করে গত বৃহস্পতিবার থানায় মামলা করেন। গত শুক্রবার রাতে আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ গ্রামের মোহাম্মদ মামুন (১৮) ও পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ ছনহরা গ্রামের হেলাল উদ্দিনকে (২৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুজনেই গত শনিবার বিকেলে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জয়ন্তী রাণী রায়ের আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দি দেন। তাদের স্বীকারোক্তিতে আবদুন নুর ও মোহাম্মদ শহীদের নাম বলা হয়।