চট্টগ্রাম, , রোববার, ৫ মে ২০২৪

প্রদীপ শীল রাউজান প্রতিনিধি

উন্নত পাঠদান পদ্ধতির বিকল্পবাচক প্রক্রিয়ায় শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে শরীফপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়

প্রকাশ: ২০১৯-১০-২৪ ০০:২৯:২২ || আপডেট: ২০১৯-১০-২৪ ০০:২৯:৩০

প্রদীপ শীল, রাউজানঃ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাবে। মেধা মনন যুগপৎ শিক্ষা ব্যবস্থা প্রাথমিক পর্যায়ের কোমলমতি শিশুদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে উন্নত পাঠদান পদ্ধতির বিকল্পবাচক প্রক্রিয়া। প্রাথমিকস্তরে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি ও ম্যানেজিং কমিটির বন্ধু সুলভ আচরণে আমূল পরিবর্তন হতে পারে আজকের শিশুদের জন্য আগামীর জ্ঞান অর্জনের সঠিক ঠিকানা।

সমাজে পিছিয়ে পড়া কোমলমতি শিশুরা অবহেলিত হলে দেশ যেমন পিছিয়ে যাবে, তেমনি মেধাশুন্য হয়ে পরবে জাতি। সরকার সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করে ঘোষনা দিয়েছেনন জ্ঞান অর্জনে বাদ যাবে না একটা শিশুও। তারপরও নানান সীমাবদ্ধতার কারনে তেমনি সুদীর্ঘকাল থেকে শিক্ষার আলো থেকে ঝড়ে পড়েছে সাবেক সুলতানপুর ইউনিয়নের বর্তমান রাউজান পৌরসভার ৬নং ও ৮নং ওয়ার্ডের আংশিক নিয়ে অবস্থিত শরীফপাড়া নামে একটি পিছিয়ে পড়া গ্রাম। গ্রামের বেশি ভাগ লোক কৃষি কাজ করেন। তারা কাঁশখালী খালের তীরবর্তী মৌসুমী সবজী ও মৌসুমী চাষাবাদ করে জীবীকা নির্বাহ করে থাকে। এই এলাকার লোকজন বরাবরেই অসচেতন। গুটিকয়েক লোক শিক্ষা আলো স্পর্শ করতে পারলেও, বেশী ভাগ লোক দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করায় মাঠে কৃষি কাজে ব্যবহৃত হতো অল্প বয়সী নারী পুরুষ।

কর্মক্ষেত্রসহ সর্বক্ষেত্রে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা উপলদ্ধির থেকে ১৯৭০ স্থানীয় দানশীল ও শিক্ষিত ব্যাক্তিবর্গের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় ৪৯ নং শরীফ পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্বাধীনতা পরর্বতী বিদ্যালয়টির ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ছিল নগন্য। অসচেতনায় বার বার পিছিয়ে যাচ্ছিল শিক্ষা ব্যবস্থা। তখন এলাকার মানুষকে তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে ভর্তি ও শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে উন্নত জীবণ যাপনের সুফল সমূহ তুলে ধরেন স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে মুক্তিকামী জনতা। যুদ্ধ বিধর্স্ত স্বাধীন দেশকে নতুন রূপে গড়ার কাজে বঙ্গবন্ধুর ঘোষনা ছিল বাঙ্গালী জাতিকে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশকে সোনার বাংলায় পরিনত করতে হবে।

তখন দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পূন গঠনের কাজে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকে শরীফ পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। তবে বিদ্যালয়টি মাঝ পথে এসে অব্যবস্থাপনার কারণে কমে আসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। সাথে রয়েছে ক্লাস রোম সংকট, ছিল শিক্ষক সংকট, সীমানা প্রাচীন বিহীন স্কুলটি ছিল সম্পদহারা।

নানা সংকটে নিমর্জিত শরীফ পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে একটি সময় উপযোগী আধুনিক, শিক্ষার সুষ্ঠু্ পরিবেশ নিশ্চিত করতে রাউজানের শিক্ষাবান্ধব সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য এলাকার ক্লিন ইমেজের তরুণ সংগঠক শিক্ষানুরাগী রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব আলহাজ্ব আহসান হাবিব চৌধুরী হাসানকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি করে একটি দক্ষ পরিচালনা পর্ষদ গঠনে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে পরামর্শ প্রদান করেন।

শিক্ষা অফিসার কমিটি গঠনের পর থেকে আমূল পরিবর্তন আসতে শুরু করে বিদ্যালয়টির সর্বক্ষেত্রে। বর্তমান সভাপতি আলহাজ্ব আহসান হাবির চৌধুরীর নিষ্ঠা ও আন্তরিকতায় বর্তমান এই স্কুলের ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা ১৬২ জন্য। শিক্ষক সংখ্যা ৬ জন।

সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী দুইটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত হয়ে বর্তমান স্কুলের কার্যক্রম দেখে ভূয়সী প্রসংশা করেন এবং সীমানা প্রাচীন ও অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারী বরাদ্দ প্রদান করেন। ইতিমধ্যে ক্লাস রোম সংকট নিরসনে একটি দ্বিতল নতুন ভবণ নির্মানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন সাংসদ ফজলে করিম।জানা যায়, বর্তমানে শ্রেনী কক্ষ রয়েছে ৫টি।

পরিচালনা কমিটির সভাপতি আহসান হাবিব চৌধুরী জানান, শিক্ষার মান উন্নয়নে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এই স্কুলে আশপাশেরর এলাকাটি পিছিয়ে পড়া একটি অবহেলিত জনপদ। আমি সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে মাননীয় সাংসদের সহযোগীতায় স্কুলের আমূল পরিবর্তন করেছি। শিক্ষার মান বৃদ্ধি হয়েছে বর্তমানে। অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। আমরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাস হয় চালু করছি। ক্ষুদে শিক্ষার্থীর বিনোদনের জন্য খেলাধূলার মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। মাঠের দক্ষিণ প্রান্তে আস্থাপন করা হয়েছে বিনোদন মূলক দোলনাসহ নানান রকম উপকরন। ফুলের বাগান করা হয়েছে সৌদর্য্য বন্ধণে।

এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী স্কুলের সীমানা প্রাচীন নির্মাণ করে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন এবং সুরক্ষিত করেছেন স্কুলের সম্পত্তি। এজন্য তিনি প্রায় চার লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। এছাড়া সাংসদ শরীফ পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করে চলেছেন।

সভাপতি আহসান হাবিব জানান, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় আনন্দদায়ক পাঠদানে পুরো শিক্ষক প্যানেল নিরলস ভাবে কাজ করছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীর জন্য। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমারব্যক্তিগত টাকায় শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্য স্কুলের পোষাক বা ড্রেস প্রদান করেছি বিগত তিন বছর যাবত । দৈনন্দিন পাঠ্যকার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য শিক্ষার্থীদের জন্য ড্রাইরী প্রদান করা হবে।

এছাড়া জাতির জনক বঙ্গনন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্মৃতিপট ধরে রাখার জন্য একটি বঙ্গবন্ধু কর্ণার করা হবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসমূখী করতে সাংসদ ফজলে করিম চৌধুরী প্রতিদিন টিফিন প্রদান করে থাকেন। যাহা দেশে নজীর বিহীন। তিনি শিক্ষার মান উন্নয়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *