admin
প্রকাশ: ২০১৯-১১-১৯ ২৩:১৫:৩২ || আপডেট: ২০১৯-১১-১৯ ২৩:১৫:৪২
রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বৈদ্যুতিক ফাঁদে জড়িয়ে এক বন্যহাতি মারা যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে । উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের নারিশ্চা জয়নগর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মরা হাতিটিকে রাতের আঁধারে গর্ত করে পুতে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। পরে খবর পেয়ে বন অফিসের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে হাতিটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করেন। এই ঘটনায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বনবিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা প্রহলাদ চন্দ্র রায় বলেন, পদুয়া জয়নগর এলাকার আবুল হাসেম (৫০) তার বসতবাড়ি ও কলা বাগান হাতির আক্রমন থেকে রক্ষায় বসতঘরের চারপাশে বৈদ্যুতিক তার দিয়ে ফাঁদ পেতে রাখে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাতে ওই ফাঁদে জড়িয়ে হাতিটি মারা যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় হাতিটিকে তার বসতবাড়ি থেকে ১০০ গজ দূরে নিয়ে গিয়ে মাটিতে পুতে ফেলেন । খবর পেয়ে অভিযান চালান রাঙ্গুনিয়া বনবিভাগের কর্মকর্তারা। অভিযানে হাতিটিকে ওই স্থানের মাটির ৭ ফুট গভীর থেকে উঠানো হয়। পরে উপজেলা প্রানিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন হারুন অর রশিদ ও রাঙ্গুনিয়া শেখ রাসেল এভিয়ারী পার্কের সহকারি ভেটেরিনারি সার্জন আলিমুল রাজী হাতিটির ময়না তদন্ত করেন।
পরে পদুয়া ইউনিয়নের নারিশ্চা বনবিট কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বন্য প্রাণি সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে পদুয়া জয়নগর এলাকার আবুল হাসেম (৫০), তাঁর ছেলে মহিউদ্দিন (২৮), সাহেব উদ্দিন (২৫) ও প্রতিবেশী মো. জেবল হোসেন (৪০) এর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত নামা আরও ১৫/২০ জনকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তরা বন কর্মকর্তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘরের দরজা তালা বন্ধ করে পালিয়ে যায়।’
উপজেলা প্রানিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন হারুন অর রশিদ বলেন, “ প্রায় ৩ টন ওজনের ৮/১০ বছর বয়সী হাতিটির শুঁড়ে আঘাতের দাগ রয়েছে। সারা শরীরে পোড়া দাগ। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।’
স্থানীয়রার জানান, পাকা আমন ধানের গন্ধে রাঙ্গুনিয়ায় প্রতি রাতে খাবারের খোঁজে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বন্য হাতির দল। উপজেলার কোদালা, শিলক, সরফভাটা ও পদুয়া ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় এই তান্ডব চলছে। সম্প্রতি সরফভাটা পাহাড়ি এলাকা থেকে রাতের আঁধারে একটি হাতি লোকালয়ে চলে আসে। এটি ওই এলাকার ক্ষেত্রবাজারে অনেক্ষণ অবস্থান করে। তবে রাতেই এটি বনে ফিরে যায়। হাতির পাল গত এক সপ্তাহে ৫ একরেরও বেশি ধান নষ্ট করেছে বলে এসব এলাকার কৃষকরা জানিয়েছেন। এ কারণে কৃষকদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ছে।
পাকা আমন ধান বাঁচাতে কৃষকেরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। লোকালয়ে বন্যহাতির পাল প্রতিবছর বছর এভাবে হানা দিলেও হাতি তাড়াতে কর্তৃপক্ষের কোন তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে পাহাড়ে হাতির পর্যাপ্ত খাদ্যের অভাব ও নিরাপদ আবাসস্থল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এভাবে হাতির দল হানা দিচ্ছে বলে জানায় বনবিভাগ। বন বিভাগের কর্মীরা এ ব্যাপারে সজাগ রয়েছেন বলে জানায়।