চট্টগ্রাম, , মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

শংকর চৌধুরী খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি

খাগড়াছড়ি আ.লীগের সম্মেলন নিয়ে মিথ্যাচারের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশ: ২০১৯-১১-২২ ২২:২৩:৪০ || আপডেট: ২০১৯-১১-২২ ২২:২৪:৫৪

খাগড়াছড়ি,প্রতিনিধি :

দির্ঘ সাত বছর পর আগামী ২৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলকে নিয়ে মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সমীর দত্ত চাকমাকে অভিযুক্ত করে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার দাবীতে, শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

জেলার নয় উপজেলা ও তিন পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি/সম্পাদক ও নেতৃবৃদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, মানিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাঈনুদ্দিন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উৎসব মুখর পরিবেশে সুন্দর ও জাকজমকপূর্ণভাবে সফল করার লক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের তথাকথিত সহ-সভাপতি নামধারী উগ্র সাম্প্রদায়ীক মনোভাবাপন্ন ও ইউপিডিএফের এজেন্ট দলের ভিতরে বারবার বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টাকারী “সমির দত্ত চাকমা” উক্ত সম্মেলন নিয়ে পরিকল্পিতভাবে একটি বিশেষ মহলকে সন্তুষ্ট করার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যাচার ও গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন। এ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে “সমির দত্ত চাকমা” ও তার গং কর্তৃক বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) খাগড়াছড়ি শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

এতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ট্রাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ও বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে যে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য প্রদান করেছে তা একদিকে যেমন তথ্যবিভ্রাট, অনভিপ্রেত, অনাকাক্সিক্ষত ও দুঃখজনক এবং দলের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। তার এহেন বক্তব্য জেলা আওয়ামী লীগসহ নয় উপজেলা, তিন পৌরসভার সকল সভাপতি/সম্পাদকগণ তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে এবং এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে অত্যন্ত শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, দলের কর্মাকান্ডকে আরো গতিশীল করতে দলীয় নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ গত তিন মাস ধরে উৎসবমুখর পরিবেশে এবং গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর কাউন্সিল সম্পন্ন করেছে। যেসব উপজেলায় একাধিক প্রার্থী ছিল সেখানে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কাউন্সিলররা ভোট দিয়ে তাদের নেতা নির্বাচিত করেছেন। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করেননি।

অভিযুক্ত সমির দত্ত চাকমা আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফের এজেন্ট উল্লেখ্য করে লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, সমির দত্ত চাকমাকে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দলের নেতাকর্মীরা কখনোই দলীয় কোন কর্মকান্ডে পাইনি। তিনি কখনও নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণও করেননি। তিনি আওয়ামী লীগের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা একজন ইউপিডিএফ এজেন্ট।

সংবাদ সম্মেলনে, অন্যান্ন বক্তারা বলেন, জেলা সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বটবৃক্ষের মত ছায়া দিয়ে নেতাকর্মীদের আগলে রেখেছেন। ২০০১ সালের প্রহসনমূলক নির্বাচনের পর পাহাড়ের দানব আব্দুল ওয়াদুদ ভূইয়ার হাতে নির্যাতনের স্বীকার হয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী যখন এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করছিলেন, ঠিক তখন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা নিজের অর্থ, শ্রম, মেধা সবকিছু উজার করে দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের বুকে আগলে রেখেছেন। দুঃসময়ের এই অভিভাবকের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তার এবং দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতে, সম্মেলন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রকারী সমীর দত্ত চাকমাকে বহিষ্কারের দাবী করা হয়। অন্যথায় খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ, নয় উপজেলা ও তিন পৌরসভা আওয়ামী লীগ সম্মেলিতভাবে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবে বলে জানানো হয়।

এসময়, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রণ বিক্রম ত্রিপুরা, সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চাইথো অং মারমা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুল জব্বার, এডভোকেট আশুতোষ চাকমা, দীঘিনালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান হাজ¦ী মোহাম্মদ কাশেম, মানিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ জয়নাল আবেদীন, পানছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল মোমিন, মহালছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রতন কুমার শীল, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সনজীব ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদক বিশ^জীত রায় দাশ, মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ হুমায়ুন মোর্শেদ খাঁন, খাগড়াছড়ি পৌর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাবেদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও পেলেন মেয়র পরিমল দেবনাথ সহ নয় উপজেলা, তিন পৌরসভার সভাপতি/সাধারণগণ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) খাগড়াছড়ি শহরের মহাজন পাড়াস্থ একটি রেস্টুরেন্টে আগামী ২৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ট্রাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি এবং বিভিন্ন উপজেলায় অনুষ্ঠিত কাউন্সিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে, সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সমীর দত্ত চাকমা।

এতে বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মিথ্যা বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে অভিযোগে সমীর দত্ত চাকমাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবী জানিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *