চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রদীপ শীল রাউজান প্রতিনিধি

রাউজানে গভীর রাতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু জাফর চৌধুরীর ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন

প্রকাশ: ২০১৯-১২-০৩ ২১:২৫:১৪ || আপডেট: ২০১৯-১২-০৩ ২১:২৫:২৪

প্রদীপ শীল, রাউজানঃ

গভীর রাতে রাউজান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের বাড়ি ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়ছেন দুর্বৃত্তরা। গত ২ ডিসেম্বর দিবাগত রাত সারে তিন টায় বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে রাউজান উপজেলার ৭নং রাউজান ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামে কমান্ডার আবু জাফর চৌধুরীর বাড়ীতে আগুন লাগানোর এই ঘটনা ঘটে।

রাউজান উপজেলা আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক কমান্ডার আবু জাফর চৌধুরীর বাড়ী ঘর ছাড়াও রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে হাফেজ বজলুর রহমান সড়কের পাশে তার ভাড়া দেওয়া গ্যারেসে দুস্কৃতকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয়।

সরেজমিন পরিদর্শন কালে দেখা যায়, আবু জাফর চৌধুরীর শয়ন কক্ষে ও তার মালিকানাধিন রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে সিএনজি অটো রিক্সা রাখার গ্যারেজে দুস্কৃতকারীরা আগুন লাগিয়ে দেয়।
গ্যারেজের পাশে মুক্তিযোদ্ধা ভাড়টিয়া মোঃ ইউছুপ জানান, গ্যারেজে আগুন লাগার সাথে সাথে শোর চিৎকার দিলে এলাকার লোকজন এসে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।

দৃস্কৃতকারীদের লাগিয়ে দেওয়া আগুনে গ্যারেজ আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হলেও ঘরের মালামাল, জমির দলিলপত্র, ঘরের আলমিরার বাক্সে রক্ষিত টাকা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। দুস্কৃতকারীরা আগুন দেয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যরা ঘরে ছিলেন না। তিনি অসুস্থ হওয়ায় তাকে নিয়ে তার স্ত্রী গত ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরে চলে যায়। তার সন্তান হিরু, পাবেল ও চট্টগ্রাম শহরে ছিলেন। এলাকার প্রতিবেশী কাজী আবদুল হামিদ ঘুমিয়ে ছিলেন তার বাড়িতে।

তিনি জানান রাতে হঠাৎ ঘুমের মধ্যে শরীরে গরমের তাপ লাগায় ঘুম থেকে উঠে ঘরের মধ্যে আগুন দেখতে পায়। এসময়ে কাজী আবদুল হামিদ শোর চিৎকার করলে প্রতিবেশী লোকজন ঘুম থেকে উঠে আগুন নেভানোর কাজে ঝাপিয়ে পড়ে। এলাকার লোকজন মসজিদের মাইক দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর চৌধুরীর ঘরে আগুন লাগার ঘটনা প্রচার করলে এলাকার শত শত মানুষ আগুন নেভাতে ছুটে আসে এবং ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়।


রাত সাড়ে তিনটায় অগ্নিকান্ডের সংবাদ পেয়ে রাউজান ফায়ার ষ্টেশন থেকে দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় । এলাকার লোকজন জানান দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছার পূর্বে এলাকার লোকজন আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। ঘটনার সংবাদ পেয়ে ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে রাউজান থানার ওসি তদন্ত মীর হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের এক দল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

মুক্তিযোদ্ধার ঘরে আগুন দেয়ার ৪দিন পূর্বে গত ২৮ নভেম্বর শুক্রবার ভোর রাতে একই ভাবে রাউজানের রমজান আলী হাট এলাকায় গাউছিয়া ডেকোরেশনের দোকানে আগুন লাগিয়ে দিলি কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং অপর দুইটি দোকান পুড়ে যায়।


রাউজান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবু জাফর চৌধুরীর ঘরে আগুন লাগানোর ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবদুল ওহাব, রাউজান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ, মুক্তিযোদ্ধা ইউছুপ খান, সুনিল চক্রবর্তী, মুক্তিযোদ্ধা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, ৭নং রাউজান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম জসিম উদ্দিন হিরু, রাউজান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুল আমিন সহ আওয়ামী লীগ যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।


তারা ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান। এ প্রসঙ্গে আওয়ামীলীগের সভাপতি কাজী আবু জাফর বলেন, এই ঘটনা একজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার জন্য জন্য পরিকল্পিত ভাবে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওলতায়য় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

আগুন লাগানোর ঘটনায় রাউজান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবু জাফর চৌধুরী বাদী হয়ে ১০জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামী করে রাউজান থানায় নাশকতার মামলা দায়ের করেছেন বলে রাউজান থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই নুর নবী জানান।

রাউজান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবু জাফর চৌধুরীর বাড়ি ওও রমজান আলীর হাট বাজারের মাকের্টে দুস্কৃতকারীরা আগুন লাগিয়ে দেওয়া ঘটনায় এলাকার সাধারন মানুষ বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। তারা প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার পূর্বক শাস্তিরর দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *