চট্টগ্রাম, , শনিবার, ৪ মে ২০২৪

admin

রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ড- থামছেনা

প্রকাশ: ২০১৯-১২-১১ ১৬:২৪:০০ || আপডেট: ২০১৯-১২-১১ ১৬:২৪:০৭

আবদুল্লাহ মনির, টেকনাফ :

টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা ডাকাত দলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে অত্র এলাকার সাধারন মানুষ গুলো।এই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা নিজেদের আদিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিনিয়ত অবৈধ অস্ত্রের মহড়া ও গোলাগুলি সংঘটিত করে খুন,অপহরন,ডাকাতিসহ এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা সংঘটিত করছেনা। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এক শ্রেনীর অসাধু রোহিঙ্গা চক্র অবৈধ অস্ত্র মওজুদ করে ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য ডাকাত দলের বেশ কয়েকটি পের সাথে যোগ হয়ে গহীন পাহাড়ে আস্তানা তৈরী করেছে। তারা অবৈধ অস্ত্রের মাধ্যমে
ক্যাম্পে বসবাসরত অসহায় রোহিঙ্গাদের জিম্মী করে মাদক পাচারও অব্যাহত রেখেছে।

তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়,পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত আব্দুল হাকিম গ্রপের সাথে পাল্লা দিয়ে আরো ৫/৬টি ডাকাত দল সৃষ্টি হয়েছে। তারা এখন নিজেদের আদিপত্য নিয়ে প্রতিনিয়ত সংঘটিত করছে গোলাগুলি। এতে ক্যাম্প
সংলগ্ন অত্র এলাকার সাধারন মানুষ গুলো পড়েছে বিপাকে। তারা এখন দিন কাটাচ্ছে ভয়ে আর আতংকে। এদিকে রোহিঙ্গা ডাকাত দলের বেপরোয়া সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রতিরোধ ও অপরাধীদের নির্মুল করার জন্য উপজেলায় দায়িত্বরত আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের কঠোর অভিযানে বেশ কয়েকজন শীর্ষ ডাকাত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছিল। তারপরও বন্ধ হচ্ছেনা রোহিঙ্গা ডাকাত দলের অপতৎপরতা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড।

সরেজমিনে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে জানা যায়, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোর মধ্যে টেকনাফের বেশ কয়েকটি ক্যাম্প দিনদিন অশান্ত হয়ে ওঠছে। বিশেষ করে হ্নীলা ইউনিয়নের মৌচনী নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প, শালবাগান, লেদা, জাদিমুড়া, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চাকমারকুল ও উনচিপ্রাং ক্যাম্পে রোহিঙ্গা উগ্রপন্থি সংগঠনের সন্ত্রাসীরা সবচেয়ে বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠছে। এসব ক্যাম্পের পাহাড় গুলোতে আস্তানা ঘেড়েছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।


ক্যাম্পের সাধারণ রোহিঙ্গারা জানান, ডাকাত ও সন্ত্রাসী গ্রুপ গুলোর কাছে অস্ত্র মজুদ রয়েছে। তারা ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার সময় এসব অস্ত্র বাংলাদেশে নিয়ে আসছিল বলে ধারণা ক্যাম্পের সাধারণ রোহিঙ্গাদের। তারা জানান, ক্যাম্পে অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের চলাচল ও আচরণ খুব বেপরোয়া। তারা ক্যাম্পের অন্য রোহিঙ্গাদের সবসময় হুমকি ধমকি দিয়ে আতঙ্কে রাখে এবং তাদের ব্যাপারে মুখ বন্ধ রাখতে কঠোর নির্দেশ দিয়ে থাকে।


এদিকে গত শনিবার গভীর রাতে টেকনাফের হ্নীলা নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় আবারও পাহাড়ে অবস্থানরত ডাকাত দলের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। প্রায় দুই ঘন্টা ধরে চলা গোলাগুলির ঘটনায় এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে এবং আরো দুই রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ ঘটনায় ক্যাম্পে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত)এবিএমএস দোহা জানান, গহীন পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা রোহিঙ্গা ডাকাত দলকে নির্মুল করার জন্য আমাদের পুলিশ সদস্যদের সাঁড়াশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।এর আগেও রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ী এলাকায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ ডাকাত নুরুল মোহাম্মদসহ বেশ কয়েকজন চিহ্নিত ডাকাত নিহত হয়েছিল।


তিনি আরো বলেন, সরকার ঘোষিত চলমান মাদক বিরোধী অভিযানের পাশাপাশি রোহিঙ্গা ডাকাত দল ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওয়তাই নিয়ে আসতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে এবং থাকবে।

টেকনাফস্থ র‌্যাব-১৫ সিপিসি-১ এর কম্পানি কমান্ডার লেফট্যানেন্ট মির্জা শাহেদ মাহতাব (বিএন) জানান, আমরা হাকিম ডাকাত বাহিনীসহ ক্যাম্পের ডাকাত ও সন্ত্রাসী গ্রুপ ধরতে বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করেছি। এমনকি র‌্যাবের পক্ষ থেকে পাহাড়ের লোকিয়ে পালিয়ে থাকা ডাকাত ও সন্ত্রাসীদের আস্তানা চিহ্নিত করতে প্রথমে ড্রোন উড়িয়ে এবং পরে হেলিকপ্টার দিয়ে পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করেছি। বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপের ব্যাপারে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।তবে প্রতিটি ক্যাম্পে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের ধরতে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *