admin
প্রকাশ: ২০২০-০১-০১ ২০:১৩:২৯ || আপডেট: ২০২০-০১-০১ ২০:১৩:৩৬
নিজস্ব সংবাদদাতা ■ রাঙ্গুনিয়া :
পারিবারিক বিরোধের জেরে আড়াই বছর বয়সী এক শিশুকন্যাকে গলাটিপে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়েছে মামী। অবশেষে ১৫ দিন পর শিশুটির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের পশ্চিম সরফভাটা আসকার আলী রোড এলাকার নুরুল ইসলামের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে সন্দেহজনক ভাবে নিহত শিশুর মামী স্থানীয় নুরুল আলমের স্ত্রী শান্তা আক্তারকে (২২) আটক করলে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে সে হত্যার এই ঘটনা স্বীকার করে। গতকাল বুধবার (১ জানুয়ারি) বিকালে তাকে আদালতে নেওয়া হলে সেখানে সে ১৬৪ ধারায় হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দেন তিনি। নিহত শিশুটির নাম জান্নাতুল আনীসা। সে পূর্ব সরফভাটা সিকদার পাড়া এলাকার মো. জমির উদ্দিনের শিশুকন্যা।
সে গত ১২ ডিসেম্বর মামার বাড়িতে বেড়াতে এসে ১৬ ডিসেম্বর মামীর হাতে নির্মম হত্যাকান্ডের স্বীকার হয়। ১৫ দিন খোঁজাখুঁজির পর ৩০ ডিসেম্বর মামা বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
শিশুন পিতা মো. জমির উদ্দিন জানান, গত ১২ ডিসেম্বর নিহত শিশু আনীসা তার মা রুজি আক্তারের সাথে নানার বাড়িতে বেড়াতে যায়।
১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শিশু আনীসাকে তার মামীর কাছে রেখে মা রুজি আক্তার তার বড় ছেলে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যায়। আধা ঘন্টা পর বাড়িতে আসলে মামী আনীসাকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায়। পরে সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ১৭ ডিসেম্বর রাঙ্গুনিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়রী করা হয়। ১৫ দিন নিখোঁজ থাকার পর ৩০ ডিসেম্বর সকালে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা আলগা অবস্থায় দেখে সন্দেহ হয় বাড়ির লোকজনের।
পরে দুপুরের দিকে পুলিশের সহায়তায় ট্যাংকের ভেতর থেকেই শিশুটির বিভৎস লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় লাশটি তার নিজ বাড়ি সিকদার পাড়া এলাকায় দাফন করা হয়। এই ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে মামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করে।
পরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে সে বলে, পারিবারিক বিরোধের জেরেই শিশুটিকে সে গলাটিপে হত্যা করেছে। হত্যা করে প্রথম দুইদিন পাতার বস্তার ভেতর লুকিয়ে রাখে। গন্ধ ছড়ানোর ভয়ে লাশটিকে পরে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে সে ফেলে দিয়েছে।
রাঙ্গুনিয়া থানার এসআই মাহবুব হোসেন জানান, সংবাদ পেয়ে আসকার আলী রোড এলাকায় জান্নাতুলের মামার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশুটির লাশটি উদ্ধার করা হয়। হত্যার রহস্য উদঘাটনে সন্দেহজনকভাবে মামীকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং আদালতে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কিনা সে ব্যাপারেও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।