চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

শফকত হোসাইন চাটগামী বাঁশখালী প্রতিনিধি

করোনার প্রভাবে পোল্ট্রি শিল্পে ধস,পথে বসার অবস্থা খামারীদের

প্রকাশ: ২০২০-০৪-১৪ ২৩:৩০:২৭ || আপডেট: ২০২০-০৪-১৪ ২৩:৩০:৩৩

শফকত হোসাইন চাটগামী, বাঁশখালী :

বাঁশখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে করোনার প্রভাবে পোল্ট্রি শিল্পে মারাত্মক ধস নেমেছে। তীব্র খাদ্য সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই শিল্পের সাথে জড়িত বাঁশখালীর ২ শতাধিক খামারির কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মচারী বেকার হয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। হঠাৎ উৎপাদন বন্ধ এবং খাদ্যের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে খামারীরা। সারা দেশের ন্যয় বর্তমানে বাঁশখালীতেও মুরগির বাজারে চরম ধস নেমেছে। খাদ্যের অন্যতম যোগানদাতা এই পোল্ট্রি শিল্প নিয়ে করোনা ভাইরাসকে জড়িয়ে প্রথম দিকে যে অপ্রপ্রচার হয়েছিল তা নিয়েও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পোল্ট্রি শিল্পে। তখন থেকেই অনেকেই মুরগি খাওয়া ছেড়ে দেয়ায় মুরগির বাজার পড়ে যায়। পরে অবশ্যই সরকারীভাবে পোল্ট্রি শিল্পের পক্ষে প্রচারণা হলেও এই শিল্প আর ঘুরে দাড়াতে পারেনি। বর্তমানে খামারীরা কম দামে মুরগি বিক্রি করে খামার খালি করে ফেলায় একদিকে তারা বিশাল আর্থিক লোকসানে পড়ার পাশাপাশি বাজারে মুরগির বড় সংকট তৈরি হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ব্যাংক লোন নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করার ফলে তারা বর্তমানে চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন। জরুরী ভিত্তিতে সরকার এই শিল্পের দিকে সুনজর না দিলে ব্যবসায়ীদের পথে বসার পাশাপাশি দেশে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দেবে।
বাঁশখালী পৌর শহরের নিয়াজরপাড়া এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এগ্রো আর্থ এর মালিক মোহাম্মদ ফখরুদ্দীন জানান, তার মালিকানাধীন ১২টি মুরগি খামার বতর্মানে বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা। করোনার প্রভাবে খাদ্য সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁর মালিকানাধীন মুরগি খামারের প্রায় দেড় লক্ষাধিক গ্রীণ চিকেন, সোনালী মুরগি এবং লেয়ার মুরগি অনেকটাই পানির দরে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। সরেজমিনে তার ফার্ম পরিদর্শনে দেখা যায়, যেখানে সব সময় মুরগি ফার্মগুলো হাজার হাজার মুরগিতে ভরপুর ছিল এখন সেই জৌলুশ নেই। প্রায় ২৮ হাজার মুরগির ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন পৌরসভা এলাকায় তার খামারটিতে বর্তমানে মুরগি আছে মাত্র কয়েক হাজার। তাও দ্রুত বিক্রি করে না দিলে খাদ্য সংকটে ওই মুরগি মারা যাবে। ব্যবসায়ী ফখরুদ্দীন জানান, করোনার এই প্রভাবে একদিকে পানির দরে মুরগি বিক্রি করে দিয়েছি অন্যদিকে প্রায় ৩১ জন শ্রমিক কর্মচারীকে বেতন ভাতা ঠিকই দিতে হচ্ছে। করোনার প্রভাবে আয় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার এই সময়েও প্রতি মাসে শ্রমিক কর্মচারীর বেতন ভাতাসহ তার ফার্মগুলোতে প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকার উপরে তাকে পরিশোধ করতে হচ্ছে। করোনার প্রভাব শুরু হওয়ার পর থেকে এই পযর্ন্ত তার প্রায় কোটি টাকার উপরে লোকসান হয়েছে বলেও জানান ফখরুদ্দীন।
তিনি আরো জানান, সরকার অবিলম্বে তিনিসহ পোল্ট্রি খামার মালিকদের দিকে সুদৃষ্টি না দিলে দেউলিয়া হয়ে পথে বসা ছাড়া কোন উপায় নেই। তিনি সরকারের কাছে পোল্ট্রি খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি খামারীদের ভর্তুকি ও প্রনোদনা দেয়ার দাবী জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *