চট্টগ্রাম, , মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

খলিল চৌধুরী সৌদি আরব প্রতিনিধি

সৌদিতে শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় শ্রম আইনে ব্যাপক পরিবর্তন : বাতিল হচ্ছে কাফালা প্রথা

প্রকাশ: ২০২০-০২-০৬ ০৮:৫৮:০৬ || আপডেট: ২০২০-০২-০৬ ০৮:৫৮:১৫

খলিল চৌধুরী, সৌদি আরব প্রতিনিধি :

চলিত মাসে কাফালা প্রথা বাতিল হচ্ছে সৌদি আরবে। মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে একাধিক সৌদি পত্রিকা মঙ্গলবার গুরুত্বের সঙ্গে খবরটি প্রকাশ করেছে।
এতে করে শ্রমিকের অধিকার রক্ষা এবং শ্রম আইনে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে । সূত্র সৌদি গেজেট

কাফালা প্রথা এ বৈপ্লবিক ও ঐতিহাসিক পরিবর্তনটি খুলে দিয়েছে অপার সম্ভাবনার দ্বার ! এর মাধ্যমে প্রবাসী শ্রমিকেরা কোন রকম দায়বদ্ধতার মাঝে থাকবেন না, তারা তাদের মত করে স্বাধীন এবং সহজভাবে অনেক কাজ করতে পারবেন।

দেশে ফিরে যাওয়া বা সৌদি আরব অবস্থান করা, অথবা, ফাইনাল এক্সিটে সৌদি আরব ত্যাগ করার মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো শ্রমিক নিজের মত সিদ্ধান্ত নিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে কাজ সম্পাদন করতে পারবেন।

সর্বোপরি, প্রবাসী শ্রমিকগণ নিয়োগকর্তার কোন রকম অনুমোদন ছাড়াই চাকুরিতে যোগদান বা চাকুরিত্যাগ করতে পারবেন।

শূরা কাউন্সিল এবং মন্ত্রিপরিষদ কর্তৃক প্রয়োজনীয় অনুমোদনের পরে গত মে মাস থেকে প্রিমিয়ার রেসিডেন্সির প্রবর্তনের পরবর্তী ধাপ হিসাবে স্পনসরশিপ চূড়ান্ত বিলুপ্তিকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

এই নতুন আইনটি প্রবাসীদের চলাফেরার স্বাধীনতা, আবাসিক ভিসা প্রদান ও স্বজনদের ভিজিট ভিসা প্রদানের অধিকার ও সুযোগকে অধিকতর সহজতর করবে । এতে করে সৌদি আরবের অর্থনীতিও আরও সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকগণ।

সেই ১৯৭১ সাল থেকে সৌদি আরবে কার্যকর হওয়া স্পনসরশিপ সিস্টেমটি প্রবাসী শ্রমিক এবং নিয়োগকর্তার মধ্যে সম্পর্ককে নিয়ন্ত্রণ করছে। এই সিস্টেমের অধীনে, শ্রমিক সৌদিতে আসার পরে চুক্তির শর্তাবলী অনুসারে তার স্পনসরের ( কাফালার) হয়ে কাজ করার জন্য বাধ্য থাকে। কাফালা পরিবর্তন না করে অন্য কোন স্থানে সে কাজ নিতে পারত না।

স্পনসরশিপ ব্যবস্থায় মানবাধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি উভয় পক্ষের আচরণগত এবং আর্থিক অধিকারকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন পরিবর্তন আনা হয়েছে।বহু সৌদি নিয়োগকর্তা সিস্টেমের অনেক বিধানের অপব্যবহার করেছিলেন, যার ফলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলি এই সিস্টেমটি বিলুপ্ত করার আহ্বান জানাচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরেই ।

কাফালা প্রথাতে এমন অনেক নেতীবাচক দিক ছিল, যার ফলে প্রবাসী বেকারত্বের হার বাড়ছিল এবং বৈধ প্রবাসী অবৈধ হয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছিল।স্পনসরশিপ পদ্ধতির সবচে বড় অন্ধকার দিক হল এটি ভিসা বাণিজ্যের জন্য কালোবাজারীর সমৃদ্ধি ঘটাচ্ছিল

অন্যদিকে, স্পনসরশিপ সিস্টেমটি বিলুপ্ত করা হলে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের মাঝে একটি প্রতিযোগিতামূলক অবস্থার তৈরি হবে। যা সৌদি শ্রমবাজারে বৈপ্লবিক বৈচিত্র্যতা নিয়ে আসবে।

এমন কি বিভিন্ন দেশের দক্ষপেশাজীবি যারা বর্তমান সিস্টেমে সৌদি আরবে কাজ করতে আগ্রহী নন তারাও আকৃষ্ট হবেন ।বিভিন্ন দেশ থেকে অত্যন্ত দক্ষ এবং যোগ্যতাধারী প্রবাসীরা কাজ করতে এলে সৌদি আরবের সার্বিক কাজের পরিবেশের ব্যাপক উন্নতি সাধন হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *