admin
প্রকাশ: ২০১৭-০৯-০৪ ০৮:৪৭:১৭ || আপডেট: ২০১৭-০৯-০৪ ০৮:৪৭:১৭
বীর কন্ঠ ডেক্স: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু ও কক্সবাজারের ঘুমধুম সীমান্তে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনায় দুটি সীমান্তে শক্তি বৃদ্ধি করে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার পর নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু ও কক্সবাজারের ঘুমধুম সীমান্তে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি।
বিজিবির দাবি, মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির তুমব্রু ক্যাম্প থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। এর মধ্যে একটি গুলি তুমব্রুর উত্তরপাড়ার আবদুল করিম সওদাগরের টিনের চাল ভেদ করে ঘরে পড়ে। এতে কেউ হতাহত না হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ সাংবাদিকদের বলেন,‘আমরা কয়েকটি গুলি উদ্ধার করে স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পে জমা দিয়েছি।’
পরে বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান বলেন, ‘মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার সন্ধ্যায় তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কয়েক রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘স্থানীয়রা এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে আমাদের ক্যাম্পে দিয়ে গেছে। পরে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।’
গুলির ঘটনার পর থেকে সীমান্তে বিজিবি কড়া অবস্থানে রয়েছে বলেও জানান মঞ্জুরুল হাসান।
অন্যদিকে রবিবার সকাল থেকেই তুমব্রুর ঘুমধুম সংলগ্ন ওপারের ঢেকুবনিয়ার গ্রামগুলো থেকে আগুনের ভয়াবহ কুণ্ডলি দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে মায়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
এ ঘটনায় আরও বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা রবিবার প্রাণভয়ে সীমান্তের জিরো লাইনে অবস্থান নিয়েছে। সেন্টমার্টিনে রবিবার আরো ২০১১জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুকে আটক করেছে বিজিবি।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, বিগত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। সংস্থাটির ভাষ্যে, গত ২৪ আগস্ট সংঘাত শুরুর পর থেকে সবমিলে প্রায় ৭৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের পর রোহিঙ্গা যোদ্ধারা অন্তত ২৫টি পুলিশ স্টেশন ও একটি সেনাক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা করলে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।
এরপর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে হেলিকপ্টার গানশিপের ব্যাপক ব্যবহার করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এতে মিয়ানমার সরকারের হিসাবে ৪ শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহত শত শত রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে এসেছেন।