admin
প্রকাশ: ২০১৮-০৪-২১ ০১:১১:০০ || আপডেট: ২০১৮-০৪-২১ ০১:১১:০০
মোঃ নাজিম উদ্দিন, বীর কন্ঠ:
থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসাবে যোগদানের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বেশি ছুটেছেন বাল্যবিয়ে বন্ধে। যেখানে বাল্যবিয়ে সেখানেই তার হস্তক্ষেপ। মেয়ের বাবা বাল্যবিয়ের কুফল না জানলেও তিনি জানিয়ে দেন অপ্রাপ্ত বয়সে একজন নাবালিকার বিয়ে হলে কি কি ক্ষতি হবে।
প্রখ্যাত মনিষী ও দার্শনিক নেপোলিয়ন বোনাপার্টের একটি উক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি সুস্থ জাতি পেতে প্রয়োজন একজন শিক্ষিত মা। অথচ আমাদের দেশে সুস্থভাবে বেড়ে উঠা এবং সুনাগরিক হিসাবে গড়ে উঠতে বাল্যবিয়ে বড় একটি বাধা।
ওসি বলেন, বাল্যবিয়ের ফলে বিবাহ বিচ্ছেদের আশংকা তৈরি হওয়া ছাড়াও নানা পারিবারিক অশান্তি দেখা দেয়। বাল্যবিয়ে শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি করে না, পারিবারিক, সামাজিক এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধনেও সহায়ক হয়। নারী শিক্ষার অগ্রগতি ব্যাহত হয়। এছাড়া বাল্যবিয়ের প্রভাবে স্বামী, সংসার শ্বশুরবাড়ির সম্পর্কে বুঝে উঠার আগেই সংসার এবং পরিবারের ভারে আক্রান্ত হয়। অন্যদিকে শ্বশুরবাড়ি থেকেও তার উপর চাপ, অশান্তি, পারিবারিক কলহ এবং তার উপর পারিবারিক নির্যাতন। এসব কারণে শত ব্যস্ততার মাঝে খবর ফেলেই নিজে উপস্থিত হয়ে ও অফিসার পাঠিয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দেন ওসি রফিক। এই অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিরা যদি একটু এগিয়ে আসতো, তাহলে একটিও বাল্যবিয়ে হতে পারতো না।
গত ৪ দিনে নলুয়া, কেঁওচিয়া ও কালিয়াইশে ৩টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছেন। উপজেলার মৈশামুড়া এলাকার আকতার সিকদারের নাবালিকার মেয়ের সাথে ছদাহার ছোট ঢেমশার বাসিন্দা আহমদ কবিরের প্রবাসী ছেলে আবুল কাশেম মো. পারভেজের বিয়ে ঠিক হয়
২০ শে এপ্রিল স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে চলছিল বাল্যবিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। শুক্রবার দুপুরে সেখানে বর কনের পক্ষের লোকজনের খাবার-দাবার চলছিল। ওসি খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক পাঠিয়ে দিলেন এসআই হারুনুর রশিদকে। পুলিশ বর-কনের অভিভাবক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে ঢেকে বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে বুঝিয়ে বন্ধ করে দেন এই বিয়ে। নাবালিকার মেয়ের বাবা ভুল বুঝতে পেরে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়েকে কোন পাত্রের সাথে বিয়ে দেবেন না বলে মুছলেকা প্রদান করেন। এছাড়া কেঁওচিয়া ১নং ওয়ার্ডের প্রবাসী শামসুল ইসলামের দশম শ্রেণিতে পড়–য়া মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক হয় একই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলামের। ১৭ এপ্রিল খবর পেয়ে কনের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে অভিভাবকদের সাথে কথা বলে বন্ধ করে দেন বাল্যবিয়ে। ১৮ এপ্রিল কালিয়াইশের ১নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কাটগড়ের বাসিন্দা অরুন জলদাশের দশম শ্রেণির পড়ুয়া নাবালিকা মেয়ের বাল্যবিয়ে আয়োজনের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে অভিভাবকদের বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে বুঝালে মেয়ের অভিভাবক প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বাল্যবিয়ে দেবে না বলে মুছলেকা প্রদান করেন পুলিশকে।