চট্টগ্রাম, , মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

admin

নব রুপে কাপ্তাইয়ের প্রশান্তি পার্কেঃ হাতছানি দিয়ে ডাকছে ভ্রমণ পিপাসুদের

প্রকাশ: ২০১৮-০৫-১৮ ০০:৩০:১২ || আপডেট: ২০১৮-০৫-১৮ ০০:৩০:১২

নূর হোসেন মামুন, কাপ্তাই প্রতিনিধি :

অপরুপ সুন্দর্যের লীলাভুমি রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলা। কাপ্তাইয়ের প্রতিটি স্থানেই রয়ের প্রকৃতিক সুন্দর্যের মিলনমেলা। সবুজ পাহাড়, লেক, কর্ণফুলী নদী সহ অাঁকা-বাকে পাহাড়ি পথ যে কোন মানুষের মনকে অাকর্ষণ করে সহজেই। বাড়তি অাকর্ষণ ও ভ্রমণ পিপাসুদের বিনোদন প্রদানের প্রয়াসে কাপ্তাইয়ের বালুরচর এলাকায় কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের গাঁ ঘেসে নব রুপে নির্মিত হয়েছে অাকর্ষণীয় পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র ‘প্রশান্তি পার্ক’। পাহাড়, সবুজ বৃক্ষ, কর্ণফুলী নদী সহ বেশ কয়েকটি অাকর্ষণীয় স্পট নিয়ে ভ্রমণ পিপাসুদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে পর্যটন কেন্দ্রটি।

 

কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত এই বিনোদন কেন্দ্র ইতোমধ্যে অন্যতম ভ্রমণ কেন্দ্র হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি লাভ করেছে। কাপ্তাই-চট্টগ্রাম মহাসড়কের একেবারে পাশে অবস্থিত হওয়ায় সড়কপথে যে কোনো সময় অতি সহজে প্রশান্তি পিকনিক স্পটে আসা যায়। আবার কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত হওয়ায় নৌপথেও প্রশান্তি পিকনিক স্পটে আসার সুযোগ রয়েছে।

 

অসংখ্য গাছগাছালির সমাহার রয়েছে এই প্রশান্তি পিকনিক স্পটে। গাছের মগডালে লম্বা লেজওয়ালা কালোমুখি হনুমান প্রায় সময় দেখা যায়। এ গাছ থেকে ও গাছে বানরের দাপাদাপি ও লাফালাফি দেখা যাবে এখানে। এছাড়াও হরেক রকম পাখির কলকাকলিতো আছেই। প্রশান্তি পিকনিক স্পটে অনেকগুলো আকর্ষণীয় সিমেন্টের তৈরি গোলঘর রয়েছে। এসব গোলঘরে সিমেন্টের তৈরি বসার স্থায়ী ব্যবস্থাও আছে। প্রশান্তি পিকনিক স্পট সংলগ্ন কর্ণফুলী নদীতে নৌ ভ্রমণের ব্যবস্থা থাকায় অনেক পর্যটক এখানে এসে নৌ বিহারে বেরিয়ে পড়েন। আবার কর্ণফুলী নদীর মৃদু হাওয়া দুলতে দুলে করতে পারে কায়াকিং। রয়েছে কায়াকিং করার জন্য সুব্যবস্থা।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত না হলেও গাছের ছায়ায় অবস্থিত প্রশান্তি পিকনিক স্পটে সারাক্ষণ ঠান্ডা পরশ অনুভূত হয়। গরমের সময় এখানে ভ্রমণ করলে প্রাকৃতিক হিমেল হাওয়ার ছোঁয়া পাওয়া যাবে। প্রশান্তি পিকনিক স্পটের কাছ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া কর্ণফুলী নদী পর্যটকদের সবসময় আকৃষ্ট করে। প্রশান্তি পিকনিক স্পটের অদূরেই রয়েছে ঐতিহাসিক সীতাপাহাড়। যেখানে সীতাকে বনবাসে দেওয়া হয়েছিল। বনবাসে থেকে সীতা কর্ণফুলী নদীর যে ঘাটে এসে গোসল করতেন সেই ঘাটটি এখন সবার কাছে সীতার ঘাট নামে পরিচিত। প্রশান্তি পিকনিক স্পটে বিনোদনে এসে সীতার ঘাটে পা ফেলতে কার না মন চায়।

 

প্রশান্তি পিকনিক স্পটে আকর্ষণীয় দুটি কটেজ রয়েছে। এসব কটেজে রাত্রিযাপনের সুযোগও রয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার জন্য রয়েছে কাঠের তৈরি মনোমুগ্ধকর মঞ্চ। পিকনিকে আসা লোকজন নেচে- গেয়ে হৈহুল্লোড় করে এই মঞ্চ মাতিয়ে রাখেন। এখানে একসঙ্গে পাঁচ হাজার লোক সমাগমের ব্যবস্থা রয়েছে। শতাধিক বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ইত্যাদি যানবাহন পার্কিংয়েরও সুব্যবস্থা আছে। আগত পর্যটকদের রান্না করার ব্যবস্থার পাশাপাশি আধুনিক মানের টয়লেট সুবিধাও পাবেন এখানে। নারী-পুরুষের জন্য পৃথক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন টয়লেটে সার্বক্ষণিক পানি সরবরাহ রয়েছে। বিদ্যুত্ ব্যবস্থা থাকায় সন্ধ্যার পর প্রশান্তি পিকনিক স্পটের চতুর্দিকের বৈদ্যুতিক বাতির আলোর ছটায় ঝিলমিল করে বিনোদন কেন্দ্রটি।

 

আকর্ষণীয় এই বিনোদন কেন্দ্রের নাম প্রশান্তি। সত্যিকার অর্থেই এখানে আসলে প্রশান্তিতে মন ভরে যায়। প্রশান্তি পিকনিক স্পটের প্রবেশ মুখে রয়েছে শনের তৈরি গোলঘর। প্রশান্তির চতুর্দিকে রয়েছে বাঁশের চটির তৈরি হালকা দেয়াল।

 

প্রশান্তি পিকনিক স্পটের পরিচালক মো. নাছির উদ্দিন বলেন, ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যের চেয়ে মানুষকে বিনোদন দেওয়ার প্রত্যাশা নিয়েই আমরা এটি পরিচালনা করছি। এখানে যারা ভ্রমণে আসবেন তারা যদি কাপ্তাইয়ের দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে চান, রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু, সুবলং ঝর্ণা, পেডা টিং টিং, দুপপুর ঝর্ণাসহ যেকোনো স্থানে বেড়াতে যেতে চান তাহলে প্রশান্তি পিকনিক স্পটের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় যানবাহন ও গাইডের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

জানা গেছে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি এমনকি কক্সবাজার থেকেও অনেকে এখানে পিকনিক করতে আসেন। দলবল নিয়ে নয়, জোড়ায় জোড়ায় বা একা এসেও এখানে নির্মল আনন্দ পাওয়া যাবে। তবে পিকনিকে আসতে হলে আগাম বুকিং নিতে হবে। চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাসটার্মিনাল থেকে যাত্রীবাহী বাসে চড়ে অনায়াসে কাপ্তাইয়ের প্রশান্তি পিকনিক স্পটে আসা যাবে। ঢাকা থেকে সরাসরি কাপ্তাই আসতে বিভিন্ন পরিবহন রয়েছে। এসব পরিবহন প্রতিদিন ঢাকা টু কাপ্তাই যাতায়াত করে। (বুকিং করার জন্য যোগাযোগ করা যাবে ০১৮২৯৬৬৭৩২৭ (মালিক নাছির উদ্দিন) ও ০১৮৭৯১৫৭৭২১ (ম্যানেজার মো. মাসুদ) এই নাম্বারে।)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *