admin
প্রকাশ: ২০১৮-০৮-১৫ ০১:৫৭:৪১ || আপডেট: ২০১৮-০৮-১৫ ০১:৫৭:৪১
নীরব জসীম ঃ
পচাঁত্তরের ১৫ আগস্ট, বাংলাদেশের জন্য একটি শোকাহত ও কলঙ্কিত দিন। এই দিনেই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসে ঘাতকের দল বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করেছিল। সেদিন তারা কেবল বাংলাদেশের স্থপতি জনককেই হত্যা করেনি, সেই সাথে হত্যার চেষ্ঠা করেছিল বাঙ্গালী ও বাংলাদেশকে। ওই দিন থেকে বাংলাদেশের জন্য ১৫ আগস্ট একটি কালো দিন। এই দিনটি বাংলাদেশের জন্য শোকের দিন। আমরা প্রতিবছর এই দিনটাকে বাঙ্গালী জাতির জন্য শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছি। প্রতি বছরের ন্যায় ২০১১ সালের ১৫ আগস্ট লোহাগাড়া উপজেলার দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সাংবাদিক আবদুর রহিম আজাদ লোহাগাড়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শোক দিবসে উপস্থিত হয়ে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। একুই দিনটাই যে নিজের মৃত্যুদিবস হিসেবে লিখা হয়ে যাবে কে জানত? বাংলাদেশের জন্য ১৫ আগস্ট যেমন শোকের দিন ঠিক তেমনি পাশাপাশি লোহাগাড়া উপজেলার মানুষের কাছেও সাংবাদিক আবদুর রহিম আজাদের জন্য ১৫ আগস্ট শোকের দিন হিসেবে পরিণত হল। ঐদিন উপজেলার শোক দিবসের সকল অনুষ্ঠান শেষ করে আধুনগর ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যাপক আব্দুল খালেককে সঙ্গে নিয়ে বিশেষ কাজে চকরিয়ায় যাওয়ার সময় চকরিয়া কলেজের একটু আগে নলবনিয়া ফরেস্ট চেক পোস্টের সামনে পেকুয়া অভিমুখী ঘাতক বাস কেড়ে নিল লোহাগাড়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম আজাদের প্রাণ। সেই দিন তার সফর সঙ্গী হিসেবে থাকা আধুনগর ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যাপক আব্দুল খালেক আহত হয়ে কিছুদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু রহিম ভাইকে হাসপাতাল অবধি পৌছতে দিলনা ঘাতক বাসটি । হাসপাতালে পৌছার আগেই তিনি মৃত্যুর কুলে ঢলে পড়লেন। শোকের দিনে আরেকটি শোক সংবাদ লোহাগাড়ার আকাশ বাতাস ভারি হয়ে যায়। নেমে আসে শোকের ছায়া। চারদিকে কান্নার রোল শোনা যায়। সেদিন ঘাতক বাসটি শুধু সাংবাদিক আবদুর রহিম আজাদের প্রাণ কেড়ে নেয়নি, কেড়ে নিয়েছে এক অসহায় মায়ের কুল, কেড়ে নিয়েছে ভাতিজা, ভাতিজী, ভাগনী ও ভাগীনাদের প্রিয় মামা ও চাচ্চুকে। কেড়ে নিয়েছে সদ্য বিবাহিত সহধর্মীনির হাতের মেহেদীর রং না শোকানোর আগেই তার প্রিয় স্বামীকে। কেড়ে নিয়েছে লোহাগাড়ার প্রিয় সংবাদকর্মীকে। হারিয়েছে লোহাগাড়ার সংবাদকর্মীরা তাদের প্রিয় সহপাঠীকে। যিনি লোহাগাড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সংবাদ সংগ্রহ করে, সেই কাক ডাকা ভোরে লোহাগাড়াবাসীকে তাজা খবর উপহার দিতেন। রহিম ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ সেই দিন লোহাগাড়ার মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। আজও মানুষ সেদিনের কথা ভুলতে পারেনি। শোকের দিনটাই যেন আরেকটা শোকের দিনে পরিণত হলো। আজ রহিম ভাইয়ের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী, আজ এদিনেই রহিম ভাইকে পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।