প্রকাশ: ২০১৮-০৮-৩০ ০০:৫৩:৫৭ || আপডেট: ২০১৮-০৮-৩০ ০০:৫৩:৫৭
ডা: ওমর ফারুক :
কিছু তরুণ এখন নিজেদের স্মার্ট দেখাতে গিয়ে সিগারেট ও মাদক সেবন করে থাকে,কিন্তু এতে যদি স্মার্ট হওয়া যায় তাহলে আগের দিনের তামাক পাতা দিয়ে চোড়া/বিড়ি খাওয়া মানুষ গুলো আর হুক্কা/সিসা খাওয়ার লোক গুলো অনেক আগে থেকেই স্মার্ট। মাজারের বাহিরে চুলে ঝটলা লাগা গাজা খোর গুলো আরো বেশি স্মার্ট। বিয়ে বহির্ভূত পরকীয়া সম্পর্ককে যদি খারাপ না হয়ে থাকে, তবে আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগের ব্যভিচারীরাও খারাপ ছিল না।
#মুলকথাঃ
সামাজিক ও মানসিকতার অশুভ আমাদের সমাজ ও মানসিকতা আজ চরম অধঃপতনের দিকে।অশুভ আকাশ সংস্কৃতির প্রভাবে আজ আমরা বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ আধুনিক মানুষ নামে এক প্রাণী ।সুখ- শান্তি,সম্মান, আত্মীয়তার সম্পর্ক, আশা -ভালবাসা সবই আজ আমরা খুজি অর্থনৈতিক কাটামোতে।যার ফলে মানুষের মাঝে সৃষ্টি হচ্ছে অর্থ ও ক্ষমতা অর্জনের নেশা,এটি বৈধ ভাবে হোক বা অবৈধ উপায়ে হোক। এতে করে খুবই দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে অপরাধ, মাদক অপরাধ, পরকীয়া সহ আধুনিক অপরাধ সমুহ এবং কুরুচি জীবনযাপনে আকৃষ্ট হচ্ছে বর্তমান সমাজের তরুণ – তরুণীরা। আর এতে করে বারবরই আশাহত ও প্রতারিত হচ্ছে প্রকৃত ভাল মানুষ গুলো।
নিম্নে পরিচয় গোপন রেখে কয়েকটি ঘটনা তোলে ধরছিঃ
ঘটনা একঃ পাশাপাশি বাসা ভাড়া থাকত তারা।ছেলে মাদকাসক্ত ও এক কথাই গুণহীন,তবে বাপের টাকাতে ধনী ছিল। মেয়েটি খুবই সুন্দর ও শিক্ষিত ছিল।ঘটনা চক্রে ওদের প্রেম হয়ে পালিয়ে বিয়েও হয়ে যায়। কিন্তু দুই বছরের বেশি টিকতে পারিনি। কারন ছেলেটি মাদকাসক্ত থাকাতে দুই বছরের মধ্যে শারীরিক, অর্থনৈতিক সব মোহ শেষ।কারন ঔষধে আর কত পারে!
ঘটনা দুইঃ মাদকের বিষয়ে পরে লিখব,আগে দুইটি পরকীয়ার ঘটনা বলি।
(ক) ছেলে কসমিউটিক দোকানের কর্মচারী হিসাবে দোকানে মেয়ে কাস্টমার বেশি হওয়াটা স্বাভাবিক। আমাদের অঞ্চল গুলোতে প্রবাসী আধিক্য বেশি,অন্যদিকে এই ধরনের দোকান গুলোর কর্মচারী গুলো অর্থনৈতিক সচ্ছল না হলেও জামা কাপড় ও চালচলনে খুবই স্মার্ট হয়ে থাকে।ওদের হাসি মুখে কথা ও বচন ভঙ্গিতে প্রবাসীর অনেক বউ দূ্র্বল হয়ে পরকীয়তায় লিপ্ত হওয়ার নজির শত শত। এতে করে সংসার ভাঙ্গার নজিরও অনেক। অনেক গবেষণা করে বুঝতে পারি দুপক্ষের লক্ষ্য স্থান হচ্ছে- ছেলেটি চাই মেয়েটির টাকা পয়সা,স্বর্ণপাতি হাতিয়ে নিয়ে শটকাট নিজে বড় লোক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা।অন্যদিকে মেয়েটির লক্ষ্য থাকে চকচকে জীবন উপভোগের মাধ্যমে জৈবিক চাহিদা পুরণ করা।অর্থ্যাৎ যার যেটির অভাব তার সেটির প্রতি আকৃষ্টতা। যদিও শেষ ফলাফলে দেখা যায়- ছেলেটি সব নিয়ে পালিয়ে যায়, অথবা মেয়েটি সন্তান ছেড়ে বা সন্তানসহ অনিশ্চিত সংসার করার জন্য অন্ধকার বা মোহময় নতুন সংসারে পা বাড়াতে।
ঘটনা তিনঃ ভুল হাতে প্রযুক্তি আগেও নিরাপদ ছিলনা,এখনো নিরাপদ নয়।আকাশ সংস্কৃতির ম্যাগাসিরিয়াল ও অনলাইন কিছু এ্যাপসের সুবিধার্থে মহিলারা এখন এক একজন ম্যাগাসিরিয়ালের এক একটি চরিত্র,যা সব চেয়ে বড় প্রভাব পরপুরুষের প্রতি বিনা সংকোচে সম্পর্ক স্থাপনের মানসিকতা সৃষ্টি হওয়া,এতে পুরুষগন পিছিয়ে আছে তাও কিন্তু না।তবে মেয়েরা এগিয়ে।যা আগামীর জন্য মোটেও সুখকর ইঙ্গিত নয়।
বিউটি ও সাকিব সমাচারঃ বর্তমান সময়ে লোহাগাড়ার সব চেয়ে আলোচিত ঘটনা বিউটি নামে গৃহবধূর মৃত্যু। যদিও মৃত্যু নিয়ে দুই ধরনের কথা ভেসে আসছে,কেউ বলে হত্যা আবার কেউ বলে আত্মহত্যা। মৃত্যুর কারন হিসাবে কেউ বলে স্বামীর পরকীয়ার বলী,আবার কেউ বলে ঝগড়ার চলে মাদকাসক্ত স্বামীর কাছে থাকা বেশি পরিমান ইয়াবা খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।যাই হোক বিষয়টি তদন্তাধীন। মৃত্যুর কারন মাদক বা পরকীয়া যাই হোক না কেন এটাই স্পষ্ট যে এদের জীবনটি সুন্দর ছিল না।ওরা নীতি নৈতিকতার উর্ধ্বে ছিল,যার শেষ পরিমান মৃত্যু ও জেলখানা।
পাত্র-পাত্রী নির্বাচনঃ আমরা অভিভাবকগন পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে ছেলে বা মেয়ের বর্তমান অবস্থাকে বিবেচনা করি,ওদের সম্ভবনাময় অবস্থাকে বিবেচনা করিনা।পাত্র নির্বাচনের ক্ষেত্রে টাকা ওয়ালাকে যোগ্য পাত্র মনে করি,কিন্তু টাকা গুলোর উৎস বিবেচনা করিনা। অন্যদিকে মেয়ে নির্বাচনে বাহ্যিক সুন্দরটিকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আমাদের এই ভুল গুলোর কারনে যোগ্য ও সম্ভবনাময় ছেলে মেয়ে গুলো উপযুক্ত স্থান দখলে ব্যর্থ হচ্ছে,এর দায়ভার আমরা অভিভাবকগন এড়িয়ে যেতে পারিনা।
পরিশেষে বলতে চাই কারো ব্যক্তিগত চরিত্র হরণ করা আমার এই লিখাটির উদ্দেশ্য নয়।আমার লিখার মুল উদ্দেশ্য – বিউটি’রা বিউটি হয়ে, আর সাকিব’রা উন্মুক্ত হয়ে থাকুক আমাদের মাঝে।সমাজ থাকুক মাদক ও পরকীয়া মুক্ত।