প্রকাশ: ২০১৮-০৯-১২ ০০:০৬:৪২ || আপডেট: ২০১৮-০৯-১২ ০০:০৬:৪২
মো. কাউছার আলম হৃদয়:
প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললে দেখা যায় সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল। ঘর থেকে বের হয়ে আবার ঘরে ফিরতে পারা এখন ভাগ্যের ব্যাপার। গত মাসের ৩০ তারিখ আনুমানিক রাত ৯ টার দিকে রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা থেকে রোয়াজারহাট বাজারের উদ্দেশ্যে যাওয়া পথে যাত্রিবাহী অটোরিক্সার সাথে মালবাহী জিপ (চাঁদের গাড়ি) এর মুখো মুখি সংঘর্ষ হয় ঘটনাস্থলে আমার ঘনিষ্ট বন্ধু মো. সাকিল (১৯) মারা যান। প্রিয় বন্ধুর এই রকম মৃত্যু হবে কোনোদিন ভাবতে পারিনি। মারা যাওয়ার আগে ফেসবুকে তাঁর একটি স্ট্যাটাসে কাদাচ্ছে নিশ্চিন্তাপুরবাসীকে। “ মরে গিয়ে দেখতে পারতাম কে আমার জন্য কান্না করে” তার এই স্ট্যাটাস ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। শুধু নিশ্চিন্তাপুরবাসী নয় পুরো রাঙ্গুনিয়াবাসী কেঁদেছে তার জন্য। সাকিলের মৃত্যুর খবর শুনে শোকের ছায়া পড়ে পুরো এলাকায়, পড়েছে বন্ধুমহলেও। বন্ধুদের খুব ভাল একজন সহপাঠি ছিল সাকিল । সব সময় হাসি খুশিতে মেতে থাকতো। ছাত্রলীগের একজন দক্ষ কর্মী ছিল সাকিল, সরাসরি যোগ দিতেন বিভিন্ন মিটিং মিছিলে সকল নেতা কমীল প্রানের স্পন্দন ছিল সে। দূর্ঘটনার পর পরই খবর শুনে ছুটে যায় হাসপাতালে। সাকিলের সাথে থাকা আহত অটোরিক্সা যাত্রী মো. নাছির দূর্ঘটনার বর্ননা দেন। তিনি বলেন “দুর থেকে দেখছিলাম একটি গাড়ি অন্য একটি গাড়ির সাথে পাল্লা দিয়ে খুব দ্রুতগতিতে আসছিল দুটি চাঁদের গাড়ি, চোখের নিমিষেই আমাদের গাড়িতে সরাসরি আঘাত হানে একটি জিপ ,তার পর আমি চোখে অন্ধকার দেখি। আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি,যখন আমার সেন্স ফিরে আসে তখন দেখলাম আমি এক জায়গায় শুয়ে আছি। দূর্ঘটনায় আহত হয় আরো ৩ জন। এই ঘটনার জের ধরে ঘটনাস্থলে জড়ো হয় অনেক মানুষ,ক্ষুব্ধ জনতা ঘাতক জিপ চালকের শাস্তির দাবি করে। পরিবারকে সান্তনা দিতে সাকিলের নিজ গ্রামে ছুটে আসেন ড.হাছান মাহমুদ এমপি মহোদয়। তার বন্ধুমহলের একটাই চাওয়া ছিল সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্ত গাড়ি চালকদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা। দুর্ঘটনার অনেকদিন পার হয়ে গেলেও ঘাতক গাড়ি চালক আইনের আওতায় আসেনি। তার স্বজনরা বিচারের আশায় আছে। আইনের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে তারা। কিছুদিন আগে সহপাঠি সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যাওয়ার জের ধরে সারা বাংলাদেশ উত্তাল করে দিয়েছিল ছাত্রছাত্রীরা। তাদের একটাই দাবি ছিল “নিরাপদ সড়ক চাই”
এই আন্দোলন পুরো রাষ্ট্রকে নাড়া দিয়েছিল।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত পদক্ষেপের মাধ্যমে ছাত্র সমাজ রাজপথ ত্যাগ করে পড়াশেনায় মনোনিবেশ করে। তারপরও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসেনি। প্রতিদিন অকালে ঝরে যাচ্ছে অনেক তাজা প্রান।
লেখক: – ছাত্র অনার্স প্রথম বর্ষ, রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজ