আবদুল হাকিম রানা পটিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০১৯-০১-২০ ২৩:৩৩:৫৬ || আপডেট: ২০১৯-০১-২০ ২৩:৩৩:৫৬
আবদুল হাকিম রানা, বীর কন্ঠ : পটিয়ায় প্রত্যয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক একাডেমির উদ্যোগে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক, মাইজভান্ডারী ও মরমি গানের কিংবদন্তী শিল্পী আবদুল গফুর হালীর ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গত ১৮ জানুয়ারী শুক্রবার, বিকাল ৪ টায় স্মরণানুষ্ঠান ও হালী উৎসব আয়োজন করা হয়।
পটিয়া ক্লাবের মুক্ত মঞ্চে অনুষ্টিত এই স্মরণানুষ্ঠন ও হালী উৎসবে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে ছিল আলোচনা,স্মৃতিচারণ, সংগীত সন্ধ্যা। গফুর হালীর স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। স্মরণানুষ্ঠান ও হালী উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে শুরুতেই বক্তব্য রাখেন স্মরণানুষ্ঠান ও হালী উৎসব কমিটির সদস্য সচিব ও প্রত্যয় একাডেমির নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ ফারুক রবি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চেীধুরী। তিনি বলেন, আবদুল গফুর হালী আঞ্চলিক, মাইজভান্ডারী ও মরমি সংগীত স্রষ্টা। তিনি শুধু গান ও সুরের সৃষ্টি করেননি, করে গেছেন আধ্যাত্তিক চর্চাও। গুণী এই শিল্পীর সৃষ্টি আমাদের সবার কাছে তুলে ধরতে হবে। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটিয়া পৌরসভার মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ।
তিনি বলেন, গফুর হালী চট্টগ্রামের গান নিয়ে এতটাই কাজ করেছেন যে, চট্টগ্রামের গানের ভান্ডার কত ঋদ্ধ তিনি তা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করে গেছেন। এমন গুণগ্রাহী মানুষ আমাদের বর্তমান সমাজে সচরাচর পাওয়া যায় না। তাঁর মত বিরল প্রতিভার মানুষের কোন আদর-কদর আমাদের সমাজে নেই। সারাজীবন নিরীহ নিভৃতচারী প্রচারবিমুখ এই সাধক নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন। একাডেমির নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ ফারুক রবি বলেন, গফুর হালী পটিয়া তথা সারা বাংলাদেশের রত্ন। প্রত্যয় একাডেমি তাঁর সৃিষ্টকর্ম সবার মাঝে তুলে ধরার জন্য সব সময় কাজ করে যাবে। সে জন্য প্রতিবছর আমরা তাঁর স্মরণানুষ্ঠান ও হালী উৎসব এবং তাঁর স্মরণে শিক্ষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক স্বর্ণপদক প্রতিযোগিতার আয়োজন করি। একাডেমির সদস্য সুকান্ত দাশের সঞ্চালনায় অনুষ্টানে আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক অজিত মিত্র, বরেণ্য সংগীত শিল্পী কল্যাণী ঘোষ, সনজীত আর্চায্য, শীমুল শীল, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান, পটিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছৈয়দ, পটিয়া থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ভগিরৎ দাশ, পটিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম রানা, সুরকার মোহাম্মদ হারুন, শিক্ষক নেতা শ্যামল দে, প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম, শাপলা কুঁড়ি পটিয়া উপজেলার সভাপতি আবদুল করিম, মাবিয়া ও সৈয়দ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান এস. এম. হারুনুর রশিদ, গফুর হালীর নাতনী ফেরদেীস হালী, শিল্পী আলাউদ্দীন কাওয়াল, মাহফুজুর রহমান জাবেদ, একাডেমির সমন্বয়ক এমরান হোসেন রাসেল, সদস্য মোহাম্মদ সাকিব প্রমুখ।
বক্তারা আরো বলেন, গফুর হালী একজন গুণী ও কালজয়ী সংগীত শিল্পী। কিন্তু তাঁর অবদানের উপযুক্ত সম্মান তাঁকে দেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রীয় ভাবেও তাঁকে কোন সম্মানিত করা হয়নি। বক্তারা তাঁকে রাষ্ট্রীয়ভাবে মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান। কথামালার ফাঁকে গফুর হালীর কালজয়ী গান “চলরে জিয়ারতে আউলিয়া দরবার, সোনা বন্ধু তুই আমারে, রসিক দিল কাজলা, দেখে যারে মাইজভান্ডারে, ওরে প্রেম করিলে কাঁদিতে হয়, ঢোল বাজে আর মাইক বাজে, মনেরো বাগানে ফুটিলো ফুলরে,রিক্সা চালাও রসিক ড্রাইভার, মনের কথা না বুঝিলে তাঁর লাগিয়া কাঁদো না” সহ আরো বিভিন্ন ভাবের গান পরিবেশন করেন সংগীত শিল্পী কল্যাণী ঘোষ, সনজীত আর্চায্য, শিমুল শীল, মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ, ফেরদৌস হালী, আলাউদ্দিন কাওয়াল, মাহফুজুর রহমান জাবেদ, শারমিন চৌধুরী, শাহ আলম, মোহাম্মদ মহিউদ্দীন, মোছাম্মৎ সাবনুর ও প্রত্যয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক একাডেমির সদস্যরা। গানের ফাঁকে অতিথিরা শিল্পীদের শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করেন।