অধীর বড়ুয়া বোয়ালখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০১৯-০৪-২৫ ২৩:২৬:২৪ || আপডেট: ২০১৯-০৪-২৫ ২৩:২৬:২৪
বোয়ালখালী প্রতিনিধিঃ বোয়ালখালী উপজেলার খুবই জনপোকারী রায়খালী খালের শাখাটি এখন বিভিন্ন কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে দুষিত হয়ে এবং অবৈধ দখলবাজদের নিয়ন্ত্রনে ধূঁকে ধূঁকে মরছে। দুষিতকারী ও দখলবাজরা প্রভাবশালী হওয়ায় খালের সুফলভোগীদের অার্তনাদ তারা অামলেই নিচ্ছেনা বলে জানা গেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে বিশাল এলাকা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি ও সুফলভোগীদের দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। জানা যায়, উপজেলার অারাকান সড়কের পশ্চিম পাশ সংলগ্ন খালটি দিয়ে এক সময় এলাকার দৈনন্দিন চাহিদা মিঠাতে প্রচুর নৌকা-সাম্পান ও বোটের চলাচল ছিল করতো।
চট্রগ্রাম নগরীর চাক্তাই-অাছদগঞ্জ-খাতুনগঞ্জ- পার্বত্যচট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে স্বল্প খরচে মালামাল আনা-নেওয়া ও সহজে যাতায়াত করতো এলাকাবাসী। কিন্তু কালের বিবর্তন ও স্থানীয় মিলকারখানার অপরিশোধিত বৈর্জ্য ও দখলবাজদের একাধিক অবৈধ কালবার্ড সেতু নির্মান, খাল দখলের কারণে খালটি সরু ও দুষিত হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা জানান- কর্ণফুলী নদীর মোহনা থেকে পশ্চিম গোমদণ্ডী-শাকপুরা হয়ে গোলকমুন্সির হাটের পাশ দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার (অারাকান) সড়ক ঘেঁষে কালুরঘাট পর্যন্ত প্রবাহিত হয়েছে উপজেলার অন্যতম এই খালটি। একসময় খালটিকে ঘিরেই এলাকার মানুষের প্রাত্যাহিক জীবনজীবিকা পরিচালিত হতো। দুষণ -দখল ও সময়ের পরিবর্তনে রায়খালী খালটি আজ বেহাল দশা। খালটিকে ঘিরে ছোট-বড় অসংখ্য কল-কারখানা গড়ে উঠেছে। আর এ সমস্ত কারখানার দূষিত বর্জ্য সরাসরি খালে ফেলা হয়। এতে খাল দুষণ ও জীববৈচিত্র ধংস হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা বলেন, কারখানাগুলোর বিষাক্ত রঙিন বর্জ্য খালের পানিতে ফেলায় মাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
এতে অামাদের জীবনজীবিকা ও পরিবারে দৈনন্দিন দারুনভাবে অাঘাত অানছে। স্থানীয় মৌসুমী চাষীদের মধ্যে কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, খালের বিষাক্ত পানিতে দৈনন্দিন চাষাবাদে দারুন ভাবে ক্ষতিসাধন করার কারনে তারা মৌসুমী চাষাবাদ বন্ধ করে রেখেছে। এছাড়া খাল দখলের কারনে বর্ষাকালে এলাকার বাড়িঘর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। বোয়ালখালীর পৌর মেয়র আবুল কালাম আবু বলেন, আমি খালটির দখলকারীকে নোটিশ দিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করাতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু এসব নোটিশে কান দেয়নি দখলদাররা। এরপরও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানালেও দখলবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক বলেন, অবৈধ খাল দখলদার এবং মিল কারখানার দূষিত বর্জ্য খালে ফেলার দায়ে ইতিপূর্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে। এদিকে ভুক্ত ও সুফলভোগীরা এ খাল দখল ও দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।