চট্টগ্রাম, , সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

জাহেদুল হক আনোয়ারা প্রতিনিধি

সিইউএফএল সড়কে ‘নরক যন্ত্রণা’

প্রকাশ: ২০১৯-০৫-২১ ০০:৪৭:০৫ || আপডেট: ২০১৯-০৫-২১ ০০:৪৭:২৬

জাহেদুল হক,আনোয়ারা :
‘দুই বছর ধরে খানা-খন্দে ভরা সিইউএফএল সড়ক। এ সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হয় নরক পার হচ্ছি। সড়কের গর্তে গাড়ির চাকা পড়লেই সারা শরীর নড়ে ওঠে। উঁচু নিচু এই পথ পার করতেই জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। প্রতিনিয়ত সড়কের বেহাল দশার শিকার হচ্ছে যাত্রীসাধারণ। এদিকে রাস্তা খারাপের দোহাই দিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে চালকরা। এ সড়ক দিয়ে চলাচলে যাত্রীদের গাড়ি পেতেও অনেক বেগ হয়। অথচ দীর্ঘদিনের সংস্কারের অভাবে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। বর্ষা কড়া নাড়ছে দরজায়-সময়মতো সড়কটি সংস্কার না হলে ভোগান্তির মাত্রা তীব্রতর হতে পারে।’আনোয়ারা উপজেলার ব্যস্ততম সিইউএফএল সড়কের বেহাল দশা নিয়ে চাতরী চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ী মীর মোশারফ এসব কথা বলেন।
জানা যায়,আনোয়ারায় অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ব সারকারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে চাতরী চৌমুহনী বাজার থেকে রাঙ্গাদিয়া সারকারখানা পর্যন্ত সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ সরকারের অনুমোদন পেলে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি নির্মাণ করে। এরপর থেকে বছর বছর তারা সংস্কার কাজ করলেও ওই এলাকায় ডিএপি সারকারখানা,কাফকো সারকারখানা,কোরিয়ান ইপিজেড,চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল,আনোয়ারা পাওয়ার প্ল্যান্ট, সর্বোপরি কর্ণফুলী টানেল কর্তৃপক্ষের ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে সড়কটি দীর্ঘ দুই বছরের অধিক সময় ধরে যানবাহন চলাচল অনেকটা অযোগ্য হয়ে পড়ে। তাছাড়া এ সড়ক দিয়ে মেরিন একাডেমি,শাহ্ মোহছেন আউলিয়ার মাজার,পারকি সমুদ্রসৈকত,চসিকের ১৫ নম্বর ঘাট দিয়ে চট্টগ্রাম শহর ও শাহ্ আমানত বিমান বন্দরে যাতায়াতসহ উপজেলার বৈরাগ,বারশত,রায়পুর,বটতলী ও জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের বাসিন্দাদের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এ সড়কটি।
সরেজমিন দেখা যায়,এ সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে চাতরী চৌমুহনী বাজার থেকে কোরিয়ান ইপিজেডের প্রধান ফটক পর্যন্ত ৩ কিলোমিটারের অধিক সড়কের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থী,পথচারী,চাকরিজীবীসহ নানা পেশার মানুষ। বর্তমানে সড়কটির এমন অবস্থা শুস্ক মৌসুমে ধুলাবালির জন্য আর সামান্য ঝড় বৃষ্টিতে কাদা মাটির কারণে সড়কের দুপাশে মানুষের চলাচলের কোন উপায় নেই। মাঝে মধ্যে স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে সড়কটি সংস্কার করে বড় বড় গর্ত ভরাট করলেও তা কিছু দিন না যেতেই আবার গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন,ব্যস্ততম সড়কটির সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এর কারণে সামান্য বৃষ্টি হলে যানবাহন চলাচলে সমস্যায় পড়তে হয়। আবার শুস্ক মৌসুমে ধুলাবালির জন্য এ সড়কে হাঁটা যায় না। বৈরাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলায়মান জানান,গত দুই বছর ধরে এ সড়কটি সংস্কার করতে বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে ঘুরপাক খাচ্ছি। সম্প্রতি সিইউএফএল,কাফকো, কেইপিজেড ও টানেল কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে ৩ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে যথাসময়ে সংস্কার কাজ শুরু না হওয়ায় এলাকাবাসী হতাশ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী তাসলিমা জাহান বলেন,সড়কটি যেহেতু সিইউএফএল কর্তৃপক্ষের সেহেতু এলজিইডির মাধ্যমে সড়কটি সংস্কার করা সম্ভব নয়। তবে কর্তৃপক্ষ যদি সড়কটি এলজিইডির কাছে হস্তান্তর করে তাহলে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।
এ বিষয়ে সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বিদ্যুৎ কুমার বিশ^াস জানান,শিগগির সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। এটি সিইউএফএলের নিজস্ব সড়ক। বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ভারী যান চলাচলের কারণে অল্প দিনে সড়কটি নষ্ট হয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *