চট্টগ্রাম, , সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

মিজবাউল হক চকরিয়া অফিস

দুদকের অভিযান চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে ১২ চিকিৎসকের মধ্যে ২জন উপস্থিত, নিয়োগ দেখিয়ে ১২ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ

প্রকাশ: ২০১৯-০৫-২৪ ০২:১১:২৬ || আপডেট: ২০১৯-০৫-২৪ ০২:১১:২৬

মিজবাউল হক, চকরিয়া : চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে দূর্নীতির ও অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। হাসপাতালে অভিযানের সময় ১২জন চিকিৎসকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই চিকিৎসক। পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগ দিয়ে ১২ লাখ টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছেন। ২২ মে বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অভিযানে হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়ম খুঁজে পান দুদকের কর্মকর্তারা। চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয় দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি টিম এ অভিযান পরিচালনা করেন।

অভিযান শেষে বিভিন্ন বিষয়ে অনিয়নের কথা তিনি সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ আমির হামজা ২০০৬ সালে হাসপাতালে যোগদান করে এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। তিনি একচ্ছত্রভাবে পরিসংখ্যানবিদ, হিসাব রক্ষক ও ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করছেন। সবচেয়ে অনিয়ম হচ্ছে, ১২জন চিকিৎসকের মধ্যে ২জন চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।

প্রায় সময় চিকিৎসকরা উপস্থিত থাকেন। সাধারণ রোগীরা চিকিসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালের জেনারেটর বিগত ১০ বছর যাবত বিকল থাকলেও ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভাল দেখিয়ে তৈল ক্রয় বাবদ অনেক টাকা লুটপাট করা হয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে কোন ধরণের লগ বুক তৈরী না করে প্রতি বছর ২০ হাজার টাকা করে খরচ দেখিয়েছেন তিনি। হাসপাতালের কর্মচারীদের ডরমেটরীতে বাড়ি ভাড়া কম দিতে এমএলএসএস এর নামে বরাদ্দ দেখিয়ে আমির হামজা ও সিনিয়র স্টাফ নার্স লাকী ঘোষ সরকারী বাসা ব্যবহার করছেন।

তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের আশপাশ পরিস্কার করার নাম দিয়ে নামে-বেনামে মাস্টার রোলে কর্মচারী নিয়োগ দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা ও ১ জুলাই ২০১৮ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ লক্ষ টাকাসহ মোট ১১ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এমনকী যাদের নামে টাকা উঠানো হয়েছে তাদের কাউকে উপস্থিত করতে পারেনি। ২০১৮-১৯ আর্থিক সালে ১০০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নির্মানাধীন ভবন এলাকার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হলেও হাসপাতাল এলাকার সব গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। এতে হাসপাতাল এলাকার পরিবেশ বিপর্যয় হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়েও দুদক কর্মকর্তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে ১২জন চিকিৎসক কর্মরত থাকলেও ট্রেনিং ও অনুপস্থিতি ছাড়া বুধবার দ্ইুজন ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন। এতে হাসপাতালের চিকিৎসা কর্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, দুদকের অভিযোগ সেন্টার ১০৬ নাম্বারে এক ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়মের সব কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। এসব কাগজপত্র পর্যালোচনা করে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এদিকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শাহবাজ অফিসিয়াল কাজে চট্টগ্রাম শহরে ব্যস্ত থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *