চট্টগ্রাম, , সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

এম মাঈন উদ্দিন মিরসরাই প্রতিনিধি

মিরসরাইয়ে ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রম স্থগিত

প্রকাশ: ২০১৯-০৮-২৮ ১৯:২৭:৩৩ || আপডেট: ২০১৯-০৮-২৮ ১৯:২৭:৪১


এম মাঈন উদ্দিন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নানা ক্রুটিপূর্ণ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ডিজিটাল ভূমি জরিপের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার (২৮আগস্ট) উপজেলার করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি মালিকদের সাথে মতবিনিময় শেষে জরিপের কার্যক্রম স্থগিত করেন ভূমি রের্কড ও জরিপ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অর্থ ও বাজেট) এম আলীম আক্তার খান।
জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে মিরসরাই উপজেলা সেটেলম্যান্ট অফিস করেরহাট ইউনিয়নের কাটাগাং, ভালুকিয়া, জয়পুর, পূর্বজোয়ার ও পশ্চিম জোয়ার মৌজা এলাকায় ডিজিটাল সার্ভের কাজ শুরু করে। কিন্তু জরিপ টিমের লোকজন ভূমির নকশা পরিবর্তন, ঘুষ দাবিসহ জরিপ কাজে বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছেন। ত্রæটিপূর্ণ জরিপ কাজে এলাকার লোকজন ক্ষুদ্ধ হয়ে তা বন্ধ রাখার দাবি করেন।

এই ব্যাপারে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা তবারক হোসেন এলাকাবাসী পক্ষে ভূমি মন্ত্রী, ভূমি মন্ত্রনালয়ের সচিব, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসক, জেলা সেটেলম্যান্ট কর্মকর্তাসহ জায়গায় অভিযোগ দেন।
ত্রæটিপূর্ন জরিপ নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ ও পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে বুধবার ডিজিটাল ভূমি জরিপ নিয়ে ভূমি মালিকদের সাথে করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের মতবিনিময় করেন ভূমি রের্কড ও জরিপ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অর্থ ও বাজেট) এম আলীম আক্তার খান।

এসময় চট্টগ্রামের সহকারি সেটেলম্যান্ট কর্মকর্তা মুক্তার হোসেন, মিরসরাই সেটেলম্যান্ট অফিসের সহকারী সেটেলম্যান্ট কর্মকর্তা আবুল কাশেম, করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে জরিপ কাজে অনিয়ম তুলে ধরেন ভূক্তভোগী ভূমি মালিক মো.শোয়াইব, মো.সাহাবুদ্দীন, মুক্তিযোদ্ধা তবারক উল্যা, রতন চক্রবর্তী, সাইদুজ্জামানসহ একাধিক ভুমি মালিক।
বরৈয়া মৌজার মেজবা উদ্দিন বলেন, আমাদের পৈত্রিক সম্পতি ৭৪ শতক রেকর্ড না করার জন্য সার্ভেয়াররা নানা তালবাহানা করেন। পরবর্তীতে পুরো জমি রেকর্ড করে দেওয়ার কথা বলে ৪০ হাজার টাকা দাবী করেন। আমি ২০ হাজার টাকা দিয়েছে তারপরও তারা ভুল ভাবে আমাদের জমির রেকর্ড করেছে। হাজী সাহাব উদ্দিন কোম্পানী বলেন, সার্ভেয়াররা জরিপ শেষে প্রত্যেক মৌজায় সীমানা পিলার দিচ্ছে না। ফলে ভবিষ্যতে কোন সময় জমি মাপতে গেলে সবাইকে আগের মতো কষ্ট করতে হবে। প্রত্যেকটি মৌজার শুরু এবং শেষে যদি সীমানা পিলার দেওয়া হয় তাহলে জনগণের দুর্ভোগ লাগব হবে। তাদের মতো শতাধিক লোক সার্ভেয়ারদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, সারাদেশের মত চট্টগ্রামের তিনটি উপজেলায় ডিজিটাল ভূমি জরিপ কাজ শুরু করেছে সরকার। যার মধ্যে মিরসরাইয়ে করেরহাট ইউনিয়নে আর.এস টু নামের এ জরিপ কাজ চলছে। তবে এখানে জরিপকাজে নিয়োজিত সরকারি সার্ভেয়ার ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জমির মালিকানা, শ্রেণি ও সীমানা পরিবর্তনের কথা বলে ঘুষ লেনদেনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।

মতবিনিময় শেষে ভূমি রের্কড ও জরিপ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অর্থ ও বাজেট) এম আলীম আক্তার খান বলেন, জনগনের জন্যই ত্রæটিমুক্ত জরিপ কাজ । কিন্তু ত্রæটিপূর্ণ জরিপ কার্যক্রম নিয়ে জনগনের মধ্যে অসন্তোষ দেখছি। তাই পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত করেরহাট ইউনিয়নের ডিজিটাল ভূমি জরিপ কাজ স্থগিত করা হলো। এসময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভূমি মালিকদের করা অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *