চট্টগ্রাম, , বুধবার, ১ মে ২০২৪

রাঙ্গুনিয়ার ইউএনও’র উদ্যোগ, বদলে যাচ্ছে বড়খোলা পাড়া স্কুল

প্রকাশ: ২০১৯-০৮-২৮ ২২:৩৬:০৪ || আপডেট: ২০১৯-০৮-২৮ ২২:৩৬:১৩

আব্বাস হোসাইন আফতাব ,রাঙ্গুনিয়া,(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :
নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত রাঙ্গুনিয়ার দূর্গম পাহাড়ী এলাকার একটি স্কুল ইউএনও’র নজরে আসায় বদলে যাচ্ছে। স্কুলের উন্নয়নে নানা উদ্যোগ গ্রহন করায় এলাকার মানুষ উচ্ছ্বসিত। যুগ যুগ ধরে সুবিধা বঞ্চিত এই এলাকার মানুষদের কষ্ট লাঘবে রাস্তা তৈরি করে যানবাহন চলাচলে প্রশস্ত করতে প্রকল্পের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান ইউএনও। বুধবার (২৮ আগষ্ট) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান নিজে দেড় কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে সরফভাটার পাহাড়ী এলাকা বড়খোলা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। এসময় ক্লাসে তিনি শিক্ষার্থীর মুখ থেকে তাঁদের বিভিন্ন অসুবিধার কথা শুনেন। অনেক শিক্ষার্থীরা প্রায় অভুক্ত স্কুলে আসার কথা শুনে তাৎক্ষনিক খাবার এনে সব শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করেন তিনি। নিয়মিত এই স্কুলে খাবার বিতরণ করতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়ারও আশ্বাস দেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফি মওকুফ ও নিয়মিত সব শিক্ষার্থীকে শিক্ষা সামগ্রী দেয়ার উদ্যোগ নেন।
হঠাৎ খাবার পেয়ে খুশি ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী নোয়াই মারমা। সে বলে, “ তাঁর মা বেঁচে নেই। বাবাও নিয়মিত থাকেন না বাড়িতে। না খেয়ে স্কুলে আসতে হয়েছে। প্রায় সময় না খেয়ে স্কুলে চলে আসতে হয়। ”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, “ দূর্গম এই এলাকার লোকজনের জীবন যাপন খুবই কষ্টকর। আমি নিজে ওই এলাকায় গিয়ে দেখেছি। এলাকার মানুষ খুব দরিদ্র। স্কুলের অনেক শিক্ষার্থীরা সকালে না খেয়ে বিদ্যালয়ে আসার কথা জেনেছি। খাবার না খেলে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় মনোযোগী হবেনা। পরিদর্শনে দেখেছি, বিভিন্ন সংকট রয়েছে এখানে। পুরাতন ভবনে পাঠদান চলছে, ওয়াশ রুম, নলকূপ নেই, শিক্ষার্থীদের বেঞ্চ সংকট। খাতা কলম ছাড়া অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসেন। বিদ্যালয়ের এসব সমস্যা নিরসনে কাজ করে যাব। এছাড়া এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে প্রকল্প দেয়া হবে। ”
বড়খোলা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অনন্ত মারমা চৌধুরী বলেন, “ এই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশা। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজনের বসবাস এখানে। এখানকার মানুষ খুবই দরিদ্র। প্রায় দুইশত পরিবারের বসবাস এখানে। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা ফি দিতে পারেনা। প্রায় শিক্ষার্থী সকালে না খেয়ে স্কুলে আসেন। অনেক শিক্ষার্থী দুপুর গড়ালে ক্ষুধা লাগলে ছুটি নিয়ে বাড়িতে চলে যেতে চায়। স্কুলের শিক্ষকরা এক অনাথ শিক্ষার্থীকে প্রায় সময় খাবার শেয়ার করেন। ইউএনও মহোদয়ের কাছ থেকে খাবার পেয়ে শিক্ষার্থীরা খুশি হয়েছেন। সুবিধা বঞ্চিত এলাকায় ইউএনও মহোদয়ের নানামুখী উদ্যোগকে সবাই সাধুবাদ জানাচ্ছেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *