প্রকাশ: ২০১৯-০৯-১২ ১২:২৮:০৬ || আপডেট: ২০১৯-০৯-১২ ১২:২৮:১৪
আব্বাস হোসাইন, প্রতিনিধি, রাঙ্গুনিয়া,চট্টগ্রাম :
৫ম শ্রেণির ছাত্রী নোয়াই মারমা। ৬ মাস আগে মা মারা গেছে। বাবাও নিয়মিত থাকেন না বাড়িতে। প্রায় সময় না খেয়ে স্কুলে চলে আসতে হয়। হঠাৎ খাতা-কলম , স্কুল ব্যাগ ও খাবার পেয়ে খুশি সে। তার মতো আরো অনেকেই প্রায় অভুক্ত স্কুলে আসে। দারিদ্রতার কারনে শিক্ষা সামগ্রী ছাড়াই পাঠদান নিতে আসে অনেক শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের এমন দূর্দশার খবরে খাবার ও শিক্ষা সামগ্রী নিয়ে গতকাল বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ইউনিয়নের বড়খোলা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান। তিনি প্রত্যেক শ্রেণিকক্ষে গিয়ে ১১০ শিক্ষার্থীর হাতে খাতা-কলম , খাবার, ৫০ শিক্ষার্থীকে পানির পট (পাত্র), ১৫ জনকে স্কুল ব্যাগ তুলে দেন।
এর আগে ২৮ আগষ্ট ইউএনও নিজে বিদ্যালয় পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীর মুখ থেকে তাঁদের বিভিন্ন অসুবিধার কথা শুনেন। এসময়ও তিনি সব শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন। সেময় বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফি মওকুফ করে দেন। বিদ্যালয়ে কোনো শৌচাগার না থাকায় শৌচাগারের নির্মাণ করে দেন।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, “ দূর্গম এই এলাকার লোকজনের জীবন যাপন খুবই কষ্টকর। এলাকার মানুষ খুব দরিদ্র। স্কুলের অনেক শিক্ষার্থীরা সকালে না খেয়ে বিদ্যালয়ে আসে। বিদ্যালয়ে শৌচাগার না থাকায় ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এই স্কুলে নিয়মিত খাবার দেয়া হবে। স্কুলে বিভিন্ন সংকট রয়েছে। পুরাতন ভবনে পাঠদান চলছে নলকূপ নেই, শিক্ষার্থীদের বেঞ্চ সংকট। খাতা কলম ছাড়া অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসেন। বিদ্যালয়টির দায়িত্ব আমি নিজে নিলাম। এছাড়া এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে প্রকল্প দেয়া হবে। ”
জানতে চাইলে বড়খোলা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অনন্ত মারমা চৌধুরী বলেন, “ সুবিধা বঞ্চিত এলাকায় ইউএনও মহোদয়ের নানামুখী উদ্যোগকে সবাই সাধুবাদ জানিয়েছেন । এই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশা। ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর লোকজনের বসবাস এখানে। এলাকার মানুষ খুবই দরিদ্র। প্রায় দুইশত পরিবারের বসবাস এখানে। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা ফি দিতে পারেনা। প্রায় শিক্ষার্থী সকালে না খেয়ে স্কুলে আসেন। অনেক শিক্ষার্থী দুপুর গড়ালে ক্ষুধা লাগলে ছুটি নিয়ে বাড়িতে চলে যেতে চায়। ইউএনও মহোদয়ের এমন উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা খুশি হয়েছেন। ”