শংকর চৌধুরী খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০১৯-০৯-৩০ ১৯:১১:৫১ || আপডেট: ২০১৯-০৯-৩০ ১৯:১১:৫৮
শংকর চৌধুরী,খাগড়াছড়ি :
খাগড়াছড়ির নবাগত জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেছেন, ধর্মশিক্ষা থেকেই মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতা আসে। যেকোন ধর্মীয় শিক্ষাই মানুষকে নৈতিক মূল্যবোধ-সত্যনিষ্ঠ হতে শেখায়। তায় মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিক ও সত্যনিষ্ঠ হতে হলে সকলকে যে যার যার ধর্মীয় জ্ঞান লাভ করতে হবে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় জেলা প্রশাসন এবং মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গনশিক্ষা কার্যক্রম হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এর আয়োজনে খাগড়াছড়ি শহরের অফিসার্স ক্লাব হলরুমে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষাকেন্দ্র গুলোতে প্রায় ৮০% শিক্ষক নারী। এতে করে নারীর ক্ষমতায়ন, বেকারত্ব দূরীকরণ এবং আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখছে সরকার। যা সরকারের-২০২১ ভিশন বাস্তবায়নে সহায়ক ভুমিকা পালন করছে।
হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের “শিক্ষা-ধর্ম-সম্প্রীতি মশিগশির মূলনীতি” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে, “মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতা সম্পন্ন জাতি গঠনে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গনশিক্ষা কার্যক্রমের ভূমিকা” শীর্ষক এই জেলা কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
পরে, মঙ্গল প্রদীপ জে¦লে কর্মশালার শুভ উদ্বোধন করেন, জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস ও হিন্দধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্টি প্রিয়তোষ শর্মা চন্দন।
আয়োজিত কর্মশালায় খাগড়াছড়ি মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গনশিক্ষা কার্যক্রম, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প পরিচালক দীপঙ্কর চন্দ্র মন্ডল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম. এম. সালাহ উদ্দিন, পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য নির্মলেন্দু চৌধুরী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুন্নাহার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার দে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের উপ-প্রকল্প পরিচালক মদন চক্রবর্তী প্রমূখ।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বক্তারার বলেন, মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে শিশু ও বয়স্ক শিক্ষার্থীদের অক্ষর জ্ঞান ও আধুনিক শিক্ষা দানের দ্বারা সমাজে আদর্শ চিন্তা-চেতনা, নৈতিকতা, সততা, সহনশীলতা এবং মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করণে বহুআংশে সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। এই মন্দিরভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা প্রকল্প সমাজ থেকে সহিংসতা দূরীকরণে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ির ৯ টি উপজেলায় ৪৪ টি প্রাক-প্রাথমিক, ৬ টি গীতা শিক্ষা ও ৪ টি বয়স্ক শিক্ষাসহ সর্বমোট ৫৪ টি মন্দিরভিত্তিক শিক্ষাকেন্দ্রের কার্যক্রম চালু রয়েছে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্রে ১৩২০ জন, গীতা শিক্ষা কেন্দ্রে ১৬৫ জন ও বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্রে ১০০ জনসহ সর্বমোট ১৫৮৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত আছে বলে জানানো হয়েছে কর্মশালা থেকে। কর্মশালায় মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গনশিক্ষা কেন্দ্রের ৫৪ জন শিক্ষক এবং বিভিন্ন মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও এলাকার গন্যমান্য বক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।