চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

কাইছার হামিদ

বিজয়ের গল্প গাথা-৮

প্রকাশ: ২০১৯-১২-০৮ ১০:১৯:০৮ || আপডেট: ২০১৯-১২-০৮ ১০:১৯:১১

কাইছার হামিদ-৮ ডিসেম্বর ১৯৭১: এদিন পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। আকাশ ও স্থলে শাণিত আক্রমণে দিশেহারা পাক সৈন্যরা। ঢাকার দিকে পালাবার কোন পথই তাদের সামনে খোলা ছিল না পাকিদের। একের সঙ্গে অন্যের যোগ দেয়ারও কোন উপায় ছিল না। এই সুযোগে মিত্রবাহিনীর কর্মকর্তারা তিনটি ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুরো পাকিস্তানি বাহিনীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। জেনারেল জগজিত্ সিং অরোরাকে তিনটি কলাম নিয়ে ঢাকার দিকে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার জন্য বলা হয় এবং একটি ব্রিগেডকে দ্রুত হালুয়াঘাটের দিক থেকে ময়মন-সিংহের দিকে অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে এই আশ্বাস দেন যে,
আত্মসমর্পণ করলে পাকবাহিনীর প্রতি জেনেভা কনভেনশনের রীতি অনুযায়ী সম্মানজনক ব্যবহার করা হবে।

জেনারেল মানেকশ’র এই আহ্বান আকাশবাণী বেতার থেকে নানা ভাষায় বারবার প্রচার করা হয়।

ডেইলি টেলিগ্রাফ-এর সংবাদদাতা ক্লেয়ার হোলিংওয়ার্থ ৮ ডিসেম্বরের ঢাকার বর্ণনায় লিখেছেন,
সামনে এগিয়ে চলা ভারতীয় বাহিনীর কামানের গোলাবর্ষণের আওয়াজ এখন ঢাকা থেকে শোনা যাচ্ছে, সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ঢাকা। শুধু কয়েকটি টেলিফোন কাজ করছে এবং টেলিগ্রাফ মাঝে মধ্যে সচল হয়। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (বর্তমানের রূপসী বাংলা হোটেল), যেখানে আমি রয়েছি, সেখানকার বাগানে একদল লোক ট্রেঞ্চ খুঁড়ছে।

পাকি সামরিক শাসকরা কিছুতেই আত্মসমর্পণের দিকে না গিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে বাংলাদেশে অবস্থানরত সেনাসদস্যদের নির্দেশ দেয়। তবে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথা বললেও পরাজয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয় রণাঙ্গনে থাকা পাক কমান্ড। এদিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানি বেসামরিক গভর্নর ডা. মালেক মুক্তিবাহিনীর দাবি মেনে নিয়ে একটি সমঝোতায় উপনীত হতে পাকিস্তানের সামরিক শাসকদের পরামর্শ দিয়ে ইসলামাবাদে বার্তা পাঠিয়েছিলেন; কিন্তু পাক সামরিক শাসকরা সে পরামর্শ উড়িয়ে দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধের তীব্রতা বাড়তে থাকে। প্রতি ক্ষেত্রে পাকবাহিনীকে একের পর এক পরাজিত করতে থাকে মুক্তিবাহিনী। পূর্ব সীমান্ত থেকে জেনারেল জগজিত্ সিং এর প্রায় সবকটা বাহিনী দ্রুত গতিতে ঢাকার দিকে এগিয়ে আসছিল।

এদিন কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া হানাদার মুক্ত হয় ।এর আগের দিন ৭ ডিসেম্বর রাতে সীমান্তবর্তী এলাকার তিনদিকে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী কুমিল্লা বিমান বন্দরে পাক বাহিনীর ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের ঘাটিঁতে আক্রমণ শুরু করে। পাক বাহিনীর অবস্থানের উপর মুক্তিসেনারা মর্টার আর্টিলারি আক্রমণ চালিয়ে শেষ রাতের দিকে তাদের আÍসমর্পণ করাতে সক্ষম হয়। সারা রাত ব্যাপী পাকবাহিনীর সাথে যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পাক বাহিনীর কতিপয় সেনা বিমান বন্দরের ঘাটি ত্যাগ করে শেষ রাতে বরুড়ার দিকে এবং সেনানিবাসে ফিরে যায়। বিমান বন্দরের ঘাঁটিতে ধরা পড়া কতিপয় পাক সেনা আÍসমর্পণ করে। রাতে মিত্রবাহিনীর ১১ গুর্খা রেজিমেন্টের আর কে মজুমদারের নেতৃত্বে কুমিল্লা বিমানবন্দরের তিনদিকে আক্রমণ চালানো হয়। সীমান্তর্বতী বিবির বাজার দিয়ে লেঃ দিদারুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল এবং অপর দুটি দল গোমতী নদীর অতিক্রম করে ভাটপাড়া দিয়ে এবং চৌদ্দগ্রামের বাঘের চর দিয়ে এসে বিমান বন্দরের পাক সেনাদের ঘাটিঁতে আক্রমণ করে। রাতের মধ্যে বিমান বন্দরের ঘাঁিটতে অবস্থানরত পাক সেনাদের সাথে মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনীর যৌথ বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে পাকসেনাদের প্রধান ঘাঁটি পতনের মধ্য দিয়ে পরদিন ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা পাক সেনা মুক্ত হয়। এদিন ভোরে মুক্তিসেনারা শহরের চকবাজার টমছমব্রিজ ও গোমতী পাড়ের ভাটপাড়া দিয়ে আনন্দ উল্লাস করে শহরে প্রবেশ করে। তখন রাস্তায় নেমে আসে জনতার ঢল।

কুমিল্লার আপামর জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে মুক্তির উল্লাসে বরণ করে নেয়। পরে এদিন বিকেলে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা মিত্রবাহিনী জনতার উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

তৎকালীন পূর্বাঞ্চলের প্রশাসনিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মরহুম জহুর আহমেদ চৌধুরী, দলীয় পতাকা এবং কুমিল্লার প্রথম প্রশাসক অ্যাডভোকেট আহমদ আলী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ।

এদিকে ডিসেম্বরের শেষ দিকে চাঁদপুরের মুক্তিযোদ্ধা দামাল ছেলেরা দেশমাতৃকাকে শত্র“মুক্ত করার জন্য গর্জে উঠে। হাজীগঞ্জে পাকবাহিনীর প্রবল প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হয়। একটানা যুদ্ধ চলে প্রায় ৩৬ ঘন্টা। দুর্বল হয়ে পড়ে শত্র“পক্ষ। অবশেষে ওই পক্ষের ৩৯ অস্থায়ী ডিভিশন অফিসার প্রফেসর মেজর কমান্ডিং জেনারেল রহিম খান হাজীগঞ্জ হামিদা জুটমিলসহ তাদের সবগুলো ক্যাম্প ছেড়ে পালাতে শুরু করে।

৭ ডিসেম্বর রাতে চাঁদপুর শহরে এসে তারা যখন নদীপথে গানবোট, লঞ্চ, স্টিমার যোগে নারায়ণগঞ্জসহ অন্যান্য জায়গায় রওয়ানা দিতে চাঁদপুরের বিভিন্ন শ্যামল প্রান্তর মুক্ত করে আসা মুক্তিযোদ্ধারা তাদের নৌযানের উপর আক্রমণ চালায়। এতে বহু পাক সেনা হতাহত হয়। মেজর জেনারেল রহিম খানও আহত হন। তবে তার ভাগ্য ভালো ঢাকার দিক থেকে উড়ে আসা একটি হ্যালিকপ্টার তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বলা বাহুল্যা হাজীগঞ্জ থেকে আসা শত্রু বাহিনী পালিয়ে আসার পর যাবার প্রাক্কালে কোন প্রতিরোধের চেষ্টা চালায়নি দুর্বল হয়ে পড়ায়। তাই বলতে গেলে বিনা বাধায়ই ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর মুক্তি হয়।

এদিকে ওই সকাল থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা মহকুমা শহরে জড়ো হতে থাকে। ১০টার দিকে মিত্রবাহিনীর ট্যাংক বহর লেঃ কর্ণেল সুট্টির নেতৃত্বে মহকুমা শহরটিতে প্রবেশ করে। তার বিএলএফ বাহিনীর চাঁদপুর মহকুমা কমান্ডার রবিউল ইসলাম কয়েক হাজার জনতার সমানে চাঁদপুর থানার সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে উড়িয়ে দেন বাংলাদেশের পতাকা।

এদিকে একটি দল এগুচ্ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত করে ঢাকার দিকে। অপর একটি বাহিনী আশুগঞ্জের সেতুর দিকে এগুচ্ছিল। ৫৭তম ভারতীয় মাউন্টেন ডিভিশন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌঁছায়। পাকিস্তানি বাহিনী এর আগেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়ে চলে যায়। যুগপত্ভাবে ‘এস’ ফোর্সও বিনা বাধায় সরাইলে পৌঁছায়। সন্ধ্যার মধ্যে একাদশ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট আশুগঞ্জের পূর্বপাশে আজমপুর এবং দুর্গাপুরে সমাবেশ করে। সরাইল এবং শাহবাজপুরের মধ্যে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল এবং সেক্টরভুক্ত এক ব্যাটালিয়ন সৈন্য পেছন দিক থেকে অগ্রসর হতে থাকে। ভারতীয় ৩১১তম মাউন্টেন ব্রিগেডের দশম বিহার রেজিমেন্ট দুর্গাপুরের দক্ষিণে সমবেত হয়।

যৌথবাহিনীর এই অগ্রগতির ফলে পাকিস্তান সরকার ও তাদের মিত্র দেশগুলোর বুঝতে বাকি থাকে না যে, যুদ্ধে তাদের হার নিশ্চিত। এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি পালন এবং সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করে। এ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ পরিষদে ভারতীয় প্রতিনিধি সমর সেন বলেন,
পাকিস্তানকে অবশ্যই বাংলাদেশকে স্বীকার করে নিতে হবে। উপমহাদেশে শান্তি পুনঃস্থাপনের জন্য আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দিতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য না হলে জাতিসংঘের কোন প্রস্তাবই বাস্তবায়ন করা যাবে না।

এদিকে ৮ ডিসেম্বর ভোরে কমান্ডার আফতাব উদ্দিন খান ১৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে কুষ্টিয়ার মিরপুর থানায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা গান স্যালুটের মাধ্যমে উত্তলোন করেন। এরপর ৬৫ জন পাক হানাদার বাহিনীর দোসর ও রাজাকার পাহাড়পুর মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে আত্মসমর্পন করে। এদিনে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরকে শত্রু মুক্ত করে থানা চত্বরে বিজয় পতাকা উড়ানোর মধ্য দিয়ে মুক্তিকামী বীর সূর্য সন্তানেরা দৌলতপুরকে হানাদার মুক্ত করেন। দৌলতপুরকে হানাদার মুক্ত করতে ৩৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েক’শ নারী-পুরুষ শহীদ হন। সবচেয়ে বড় যুদ্ধ সংঘঠিত হয় উপজেলার ধর্মদহ ব্যাংগাড়ী মাঠে। এ যুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৩’শ পাকসেনা নিহত হয়। শহীদ হন ৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ৩ জন ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্য। ৮ ডিসেম্বর সকালে আল্লারদর্গায় পাক সেনারা দৌলতপুর ত্যাগ করার সময় তাদের গুলিতে মুক্তিযোদ্ধা রফিক শহীদ হোন। এদিনে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়।

এদিকে পশ্চিম পাকিস্তানে তাদের মূল ভরসার স্থল ছম্বে উপর্যুপরি চেষ্টা সত্ত্বেও পাকিস্তানের অগ্রগতি প্রায় থেমে যায়। অন্যত্রও অবস্থা বেশ খারাপ। রাজস্থান-সিন্ধু সীমান্তে বরং ভারতের প্রাধান্যই পরিলক্ষিত হয়, করাচীর উপর ভারতীয় নৌ ও বিমান আক্রমণ অব্যাহত থাকে। সংক্ষেপে, পশ্চিম পাকিস্তানে তাদের কোন অগ্রগতি নেই; আর পূর্বে কেবল পশ্চাৎগতি। পাকিস্তানের ইস্টার্ন কমান্ডের সম্যক বিপর্যয় দৃষ্টে রাওয়ালপিন্ডির সামরিক কর্তারা নিয়াজীর মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য ‘চীনের তৎপরতা শুরু হয়েছে’ বলে তাকে জানায়। এহেন শোচনীয় সামরিক পরিস্থিতির মাঝে ইয়াহিয়া খান বেসামরিক প্রতিনিধিদের হাতে তার শাসন ক্ষমতা হস্তান্তরের দীর্ঘ দিনের ‘ওয়াদা’ বাস্তবায়িত করতে শুরু করেন এবং ‘পূর্ব পাকিস্তান’ থেকে নুরুল আমিন ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে জুলফিকার আলী ভুট্টোকে যথাক্রমে প্রধানমন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। অন্যত্র ভারতে একই দিন অর্থাৎ ৮ই ডিসেম্বরের সন্ধ্যায় সর্বশেষ সামরিক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থতির আলোকে ভারতের সরকারী মুখপাত্র ঘোষণা করেন,
পাকিস্তান যদি পূর্ব বাংলায় তাদের পরাজয় স্বীকার করে নেয়, তবে অন্যান্য সকল অঞ্চলেই ভারত যুদ্ধ বন্ধ করবে; বাংলাদেশ ও পশ্চিম পাকিস্তানের কোন অঞ্চলেই কোন ভূখণ্ড দখল করার অভিপ্রায় ভারতের নেই।

এই ঘোষণা বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা বাদে ওয়াশিংটন সময় সকাল এগারটায় যখন WSAG-এর বৈঠক শুরু হয়, তখন JCS-এর জেনারেল রায়ান উপমহাদেশের সর্বশেষ সামরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন যে, পশ্চিমাঞ্চলে ভারতীয় বাহিনীর জোর এগুবার কোন লক্ষণ নেই, বরং পাকিস্তানের অগ্রাভিযান ঠেকিয়ে রেখেই তারা সন্তষ্ট রয়েছে বলে মনে হয়।

কিন্তু WSAG-এর সভাপতি হেনরী কিসিঞ্জার রায়ানের কাছে জানতে চান পূর্ব রণাঙ্গন থেকে ভারতীয় সৈন্যদের পশ্চিম রণাঙ্গনে নিয়ে যেতে কত সময় লাগতে পারে। জেনারেল রায়ান জানান, বেশ কিছু দিন; তবে বিমানবাহিত ব্রিগেড তাড়াতাড়িই নিয়ে যাওয়া সম্ভব, পাঁচ বা ছ’দিনের মধ্যেই।

তৎসত্ত্বেও এক সম্পূর্ণ নতুন আশঙ্কার অবতারণা করে কিসিঞ্জার বলেন,
মূল প্রশ্ন হল ভারত যদি আজাদ কাশ্মীর দখলের চেষ্টা চালায় এবং পাকিস্তানের বিমান ও সাঁজোয়া বাহিনীর ধ্বংস সাধনে প্রবৃত্ত হয়, তবে তা হবে পাকিস্তানকে ধ্বংস করার জন্য ভারতের ইচ্ছাকৃত উদ্যোগ।কিসিঞ্জার অতঃপর আবেগময় ভাষায় সমবেতদের জিজ্ঞাসা করেন,
এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের এক মিত্রকে সম্পূর্ণ পরাভূত হতে দিতে’ এবং পাকিস্তানকে ‘প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদান থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে নিবৃত্ত রাখার জন্য ভারত যদি ভয় দেখায় তা কি আমরা মেনে নিতে পারি?

স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধি সিস্কো বলেই বসেন, ভারতের এমনতর অভিপ্রায় রয়েছে কি না তা সন্দেহজনক।

তথাপি কিসিঞ্জার পাকিস্তানের জন্য ‘সামরিক সরবরাহ’ নিশ্চিত করার পক্ষে দৃঢ় অভিমত প্রকাশ করেন। সঙ্গে সঙ্গে আক্ষেপ করে বলেন যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সব কিছুই আমরা করেছি, কিন্তু সবই দু’সপ্তাহ বিলম্বে।

সূত্র: স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র, মূলধারা’৭১, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর,জনকন্ঠ, সংবাদ ও ইত্তেফাক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *