শংকর চৌধুরী খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০২০-০৩-২৯ ২০:৫০:৩৮ || আপডেট: ২০২০-০৩-২৯ ২০:৫০:৪২
শংকর চৌধুরী,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : খাগড়াছড়িতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলার রামগড় উপজেলা ও পানছড়ি উপজেলায় রবিবার ২৯ মার্চ সাপ্তাহিক হাটে শত শত লোকের সমাগনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। মহামারী করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রন ও প্রতিরোধে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস গত ২৬ মার্চ অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলার সকল হাট বাজার বন্ধ ঘোষনা করেছে। জেলা প্রশাসনের ঘোষনা কোন আমলে না নিয়েই রবিবার সাপ্তাহিক হাটের দিনে সকাল থেকেই দুটি বাজারে ক্রেতা বিক্রেতাদের ছিল উপচে পড়া ভীড়। রামগড়ের স্থানীয় সাংবাদিক বেলাল হোসেন জানান, সামাজিক নিরাপত্তা দূরত্ব বজায় না রাখার ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রামনের ঝুকি থেকেই যাচ্ছে। মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত থাকলেও তা তেমন একটা চোখে পরেনি, জনসমাগম ছিল বেশী। রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ ন ম বদরোজ্জা চৌধুরী জানান, দূর্গম পাহাড়ের লোকজন সাপ্তাহিক হাট বন্ধ ঘোষনাটি জানতো না বিদায় ভুল করে তারা বাজারে এসে ছিল। প্রশাসন তাদেরকে করোনা সংক্রামন সম্পর্কে বুঝিয়ে সচেতনতা অবলম্ভন করার পরামর্শ দিয়ে বাজার থেকে বিদায় করে দেয়া হয়েছে। রামগড় থানার ওসি সামছুসজ্জামান ভূইঁয়া জানান, সাপ্তাহিক হাট বারের কারনে গ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে বাজারে পসরা সাজিয়ে বসে। পুলিশের একটি মোবাইল টিম তাৎক্ষনিক মাইকিং করে লোকজনকে এলাকা ত্যাগ অনুরোধ জানায়। পানছড়ি উপজেলার বাসিন্দা আবাস উদ্দিন জানান, পুলিশের তিন-চারটি নিরাপত্তা বেষ্টনি, সেনাবাহিনীর মাইকিং তৎপরতা, উপজেলা প্রশাসনের কড়া নজরধারী তাদের রুখতে পারেনি। ভারত সীমান্তবর্তী পানছড়ির দূর্গম এলাকা রোহিন্দ্র কার্বারী পাড়া থেকে আসা ক্রেতা বিক্রেতারা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, আর্মি-পুলিশ আবার কেমনে দেখিবো, “আমি তো চেংগী নদী পার হইয়ারে বাজারে ডুকিয়ে। তারা আমারে ন দেখে বাবু”। কেউ কেউ জানান, দূর্গম এলাকায় রাস্তাঘাট নেই তাই মাইকের ধ্বনি তারা শুনেনি। পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিটা ইউনিয়নে জনসচেতনতামূলক সভা, মাইকিং ও লিপলেট বিতরণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। রবিবার সকাল ৬টা থেকে আইনশৃংখলা বাহিনী বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে কাজ করেছে এর পরও যদি জনগন সচেতন না হয় তাহলে তাদের আইনের আওতায় আনা ছাড়া কোন উপায় নেই। এখন থেকে প্রশাসন কঠোর ভুমিকা পালন করবে বলেও তিনি জানান। পানছড়ি থানার ওসি মো: দুলাল হোসেন জানান, যেসব এলাকায় গাড়ী যায় না মাইকিং পৌঁছে নাই মূলত সেসব এলাকায় কিছু লোক বাজারে এসেছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের বুঝিয়ে সাড়ে দশটার মধ্যেই বাজার ফাঁকা করা হয়েছে। তবে এখন থেকে তারাও সচেতন হয়ে ঘরে ফিরেছে। খাগড়াছড়ি বাজার ফান্ডের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা টিটন খীসা জানান, জেলার প্রতিটি সাপ্তাহিক হাট বাজার বন্ধের ঘোষনা দেয়া হয়েছে। তার পরও যেসব বাজারে সাপ্তাহিক হাট বসেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, হাট বাজার বন্ধের ঘোষনা থাকার পরও কিছু কিছু বাজারে কাঁচা তরকারি নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতার জমায়েত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকতাদের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে ।