এম মাঈন উদ্দিন মিরসরাই প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০২০-০৭-১৭ ১৪:০৬:২১ || আপডেট: ২০২০-০৭-১৭ ১৪:০৬:২৫
এম মাঈন উদ্দিন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)|
মিরসরাইয়ে পানিবন্দি হয়ে আছে প্রায় ৪শতাধিক পরিবার। পানি নিস্কাশনের পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় উপজেলার ৫ নং ওচমানপুর ইউনিয়নের বাঁশখালী গ্রামের বাসিন্দাদের। গত কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুম এলে কষ্টের শেষ থাকে না এখানকার মানুষের। এলাকাবাসীর দাবীর প্রেক্ষিতে পানি নিস্কাশনের জন্য পার্শ্ববর্তি জয়তারা খাল সংস্কার করা হয়। কিন্তু সংস্কারে অনিয়ম করায় আগের মত জলাবদ্ধতা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
গত বুধবার (১৫ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জলাবদ্ধতায় ভাসছে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। উঠান ভর্তি হাঁটু পানিতে দিন কাটাচ্ছে, থেমে গেছে কাজকর্ম। চুলোয় উঠছেনা হাঁড়ি পাতিল। একদিকে করোনার এই পরিস্থিতি যেখানে মানুষ খেতে পারছেনা ঠিকমতো তার মধ্যে এমন দুর্ভোগে দিশেহারা হয়ে পড়েছে এলাকাবাসীরা। এছাড়া এলাকার চলাচলের কয়েকটি রাস্তা পানিতে ডুবে ভেঙ্গে গেছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ মোস্তফা, গিয়াস উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন ও মাঈন উদ্দিন জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে আমাদের এলাকা পানিতে ডুবে থাকে। আমরা আমাদের এমপি সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের কাছে একাধিকবার আবেদন করলে তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে জয়তারা খাল সংস্কারের ব্যবস্থা করেন। খালের সংস্কার কাজ পান ট্রাম ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তারা অভিযোগ করেন, ঠিকাদার ইছাখালী অংশে সংস্কার করলেও ওছমানপুর অংশে খাল সংস্কার না করায় পরিস্থিতি আগের মত রয়ে গেছে। পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটছে প্রায় ৪শতাধিক পরিবার। রাস্তা, ঘাট, কবরস্থান পানিতে ডুবে আছে। এখানকার মানুষ স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারছেনা। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্ত পেতে সঠিক ভাবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে, না হলে আরো চরম দুর্ভোগ হতে পারে।
ওই এলাকার গৃহবধূ হামেলা খাতুন বলেন, বর্ষা মৌসুম এলে আমাদের কষ্টে সীমা থাকে না। ঠিকতম রান্না-বান্না করতে পারি না। বাড়ি ঘর পানিতে ডুবে থাকে। আমাদের করুণ অবস্থা, দেখার কেউ নেই।
ওচমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুল হক বলেন, বাঁশখালী এলাকার মানুষ জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তি পেতে সাবেক মন্ত্রী আমাদের প্রিয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের নির্দেশে খাল সংস্কারের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু ঠিকাদার নিজের মত করে কাজ করে। যে অংশে খাল চওড়া ওই অংশে সংস্কার করেছেন, যে অংশে সংকুচিত ওই অংশে সংস্কার কাজ করেনি। এই ব্যাপারে তাকে একাধিকবার বলা হলেও করোনা সহ বিভিন্ন অজুহাতে সে সঠিকভাবে খাল সংস্কার না করায় এলাকাবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।
এই বিষয়ে জানতে জয়তারা খালের সংস্কার কাজ করা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ট্রাম ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি মোহাম্মদ মুরাদের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কল দিয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ওচমানপুরের বাঁশখালী এলাকার জলাবদ্ধতার বিষয়টি কেউ আমাকে অবহিত করেনি। এখন আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি। খালের সংস্কারের বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বে। তারপরও আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবো।