চট্টগ্রাম, , মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি

জমে উঠেছে পশুর হাট: ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ খামারীরা

প্রকাশ: ২০২০-০৭-২৮ ১৯:৩৩:৫০ || আপডেট: ২০২০-০৭-২৮ ১৯:৩৩:৫৫

মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু|
নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা,বাইশারী ও কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের বৃহত্তর গর্জনিয়াসহ ৪টি কুরবানীর পশুর হাট জমে উঠেছে। বাজারে ছোট দেশি জাতের গরুর চাহিদা থাকায় ন্যায্য মূল্য না পেয়ে বিপাকে পড়েছে খামারীরা।

সড়েজমিনে এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে গ্রামের পালিত ছোট এবং মাঝারী বিপুল সংখ্যক গরু রয়েছে। তবে গরুর তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় পশু বিক্রেতাদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার চাকঢালা বাজারের ব্যবসায়ী খুরশেদ আলম ও বাইশারী বাজারের ব্যবসায়ী বেলাল জানান, দেশে করোনা দুর্যোগে মানুষের অভাব অনটনের কারণে মন্দাভাব দেখা দেওয়ায় বড় গরু কেনার মত ক্রেতার বড়ই অভাব।

তাই ছোট ও মাঝারী গরু বিক্রি হচ্ছে বেশী। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর খুবই অপ্রতুল্য। সোমবার (২৭ জুলাই) সাপ্তাহিক বাজার ছিল রামু উপজেলার বৃহত্তর গর্জনিয়া বাজার। এ বাজারে ঘুরে দেখা গেছে গরু,মহিষ, ভেড়া, ভুষ ইত্যাদি বাজারটিতে চোখে পড়ার মত হলেও তুলনামূলক বিক্রি কম হওয়ায় বিক্রেতারা হতাশ মন নিয়ে ফিরেছেন বাড়িতে। এসব এলাকার খামারী ব্যবসায়ীরা ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় লাভের পরিবর্তে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের।


কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতার পাড়া খামার ব্যবসায়ী আব্দু রশিদ জানান, তার খামারে ছোট-বড় বিভিন্ন জাতের ২৪টি গরু রয়েছে। তাতে ছোট ১৪টি গরু বিক্রি হলেও বড় গরুগুলো নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। তিনি আরো জানান, তার খামারে অষ্ট্রেলিয়ান গাভী, ঝাপসী, পিজিশিয়ান, নেপালী, ছাইওয়াল জাতের গরু রয়েছে। তার মধ্যে চার বছর ধরে লালিত পালিত বেশ কয়েকটি বড় গরু রয়েছে।

নেপালী বড় গরুটি দুয়েক বাজারে তুললেও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় বিক্রি করতে পারিনি। যার মূল্য হাকা হয়েছে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্রেতারা মুলাই। যার ওজন রয়েছে ৭৪৩ কেজি।এমন সু-উচু ৮টি গরু নিয়ে বিপাকে তিনি। তার মতে, বাহিরের বড় ক্রেতা না আসায় আমরা খামারীরা বড় গরু খামারজাত করতে আগ্রহ হারাচ্ছি।

ব্যবসায়ী আমানো হলিফা বলেন তার বেশ কয়েকটি মহিষ ছিল এমনে দাম কম থাকায় লস পড়েছে সেখানে তার একটি মহিষ মারা গিয়ে লাভের বদলে নিজের কেশ টাকাও পাবেনা।
অপর খামারী বদরু, এরশাদ উল্লাহ, হাজী আবু তালেব, হাসান, বেলাল সহ অনেকেই জানান, দেশে করোনার প্রভাবে মধ্যবিত্তরা অনেকেই কুরবানী করতে না পারায় বাজারে গরুর চাহিদা কম থাকায় বড় গরু নিয়ে চিন্তিত আমরা।

এই বাজারের ক্রেতা আব্দুস ছালাম জানান, আমরা ৩ জনে মিলে একটি গরু কিনতে এসেছি। দাম কম থাকায় আমরা সন্তুষ্ট। স্থানীয় অনেকে জানান বাজারে রোগ আক্রান্ত অনেক গরু দেখা গেছে। এই বিষয়ে বাজারের ইজারাদার সাবেক মেম্বার নজরুল ইসলাম জানান, বাজারে আসা গরুগুলো নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পশু ডাক্তারের ব্যবস্থা রয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় ৪০জন ভলেনটিয়ার সহ মাননীয় জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক বাধ্যতামুলক সহ দুরত্ব বজায় রেখে আমরা বাজার পরিচালনা করছি। সুবিধা হিসেবে দুর দুরান্ত থেকে আসা ক্রেতাদের গাড়ি পার্কিং এবং জাল টাকা শনাক্তের জন্য ব্যবস্থাও রয়েছে।

গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) আনিছুর রহমান বিকাল ৪টায় বাজার পরিদর্শন শেষে এ প্রতিবেদককে জানান, পুলিশ মোতায়ন সহ যেহেতু মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসবকে স্বরনীয় করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগীতা করে যাচ্ছি। জাল টাকা রোধে আমরা সচেষ্ট। প্রয়োজনে ক্রেতা-বিক্রেতার নিরাপত্তায় আমরা ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের লেনদেনের ব্যবস্থা রেখেছি। সেই সাথে ইজারাদার কর্তৃপক্ষকে এসপি স্যারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আগামী কাল থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমনের উদ্যোগে এলাকাবাসীর সুবিধার্থে মাত্র দুইশত টাকা হাছিলে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত প্রতিদিন অস্থায়ী পশুর হাট বসবে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর এলাকায় এতে সকলকে আমন্ত্রন জানানো হয় ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *