চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

কাইছার হামিদ

পুলিশকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেলেন

প্রকাশ: ২০২০-০৯-১৫ ০৯:১৩:২৯ || আপডেট: ২০২০-০৯-১৫ ০৯:১৩:৩৪

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়েরে অভিযোগে নগর পুলিশের ছয় কর্মকর্তাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন নুরুল আবছার। কিন্তু অভিযোগ দিয়ে ফেঁসে গেলেন নিজেই। শেষ পর্যন্ত হলেন মামলার আসামিও। দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে এমন তথ্য।

এ ঘটনায় সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দুদকের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাও দায়ের করা হয়।

দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। যাতে একমাত্র আসামি করা হয় নগরীর পতেঙ্গা থানাধীন কোনার দোকান এলাকার মরহুম বদিউল আলমের ছেলে নুরুল আবছারকে। যার বিরুদ্ধে মাদক বিক্রির অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি পুলিশের।

দুদক জানায়, ২০১৯ সালের ২৫ মার্চে মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে নুরুল আবছার বাদি হয়ে পতেঙ্গা থানার তৎকালীন ওসি আবুল কাশেম ভুঁইয়া, এসআই প্রণয় প্রকাশ, আব্দুল মোমিন, এএস আই তরুন কান্তি শর্মা, কামরুজ্জামান, মিহির ও স্থানীয় বাসিন্দা ইলিয়াছ, মো. জসিম এবং নুরুল হুদাকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

যাতে একে অপরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ক্রসফায়ার ও মৃত্যুদণ্ডের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক অর্থ আদায়ের অভিযোগ করা হয়।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, নুরুল আবছারের শ্যালকের মোবাইল নম্বর হতে এএসআই তরুন কান্তি শর্মার মোবাইল থেকে ফোনে কথোপকথন হয়। ওই সময় নুরুল আবছারকে নিকট ৩০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হয় এবং তাকে থানায় নিয়ে ক্রসফায়ার ও মৃত্যুদণ্ডের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ মামলা দায়েরের অভিযোগ উল্লেখ করা হয়।

আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদককে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্ত করেন দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়,চট্টগ্রাম-১ এর উপ-সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম।

দুদকের বাদি ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলা তদন্তকালে ফোনালাপের অভিযোগের সত্যতা প্রমাণের জন্য প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে সিডিআর-এর কপি সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। কিন্তু তাতে ওই তারিখে তরুন কান্তি শর্মার মোবাইল নম্বর থেকে কোন ফোনালাপের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। একই সাথে ঘুষ দাবির কোন সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়া মামলা দেয়ার অভিযোগেরও কোন রেকর্ড ভিত্তিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এতে প্রতীয়মান হয় অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ৯ জনকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নুরুল আবছার। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ সালের ২৮(গ) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, মামলাটি তদন্ত শেষে গত ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আদালতে সুপারিশসহ চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। যা পরবর্তীতে আদালতে দুদকের দেয়া সুপারিশ গৃহীত হয় এবং দুদক কমিশনের সিদ্ধান্তে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমোদন দেয়া হয়।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *